একটানা 25 কিমি তেল না পুড়িয়ে চলতে পারে এই দুই গাড়ি, কীভাবে সম্ভব? রহস্য জেনে নিন

আজকাল ভারতে হাইব্রিড প্রযুক্তির বাজার বেশ সরগরম। পেট্রোল ইঞ্জিনের পাশাপাশি ব্যাটারি ও ইলেকট্রিক মোটরও উপস্থিত থাকে এতে। দুই প্রকার জ্বালানির পাওয়ারট্রেনের সহাবস্থান গাড়ির আউটপুট এবং মাইলেজ, দুইই বাড়াতে সাহায্য করে। তেমনই একটি SUV গাড়ি Maruti Suzuki Grand Vitara। গত পরশুই এর উপর থেকে পর্দা সরিয়েছে সংস্থা। গাড়িটি টয়োটা (Toyota)-র সাথে যৌথভাবে তৈরি করেছে মারুতি সুজুকি (Maruti Suzuki)। এই গাড়ির টয়োটার নিজস্ব ভার্সনের নাম Toyota Urban Cruiser Hyryder, যার ঝলক ইতিমধ্যেই দেখিয়েছে সংস্থা। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এই দুটি মডেলেই উপস্থিত একটি বিশেষ রাইডিং মোড, যার নাম – পিওর ইভি (Pure EV)। এখন প্রশ্ন এর কাজ কী? কী বা এর বিশেষত্ব? জানতে হলে প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

Pure EV Mode

নাম শুনে হয়তো অনেকেই এতক্ষণে আন্দাজ করেছেন, যে ব্যাটারি চালিত মোডের নামই সম্ভবত ‘পিওর ইভি মোড’। যদি তা মনে করে থাকেন, তবে ঠিকই ধরেছেন। হাইব্রিড গাড়িতে এই মোডের ব্যবহার করে কেবলমাত্র ব্যাটারির সাহায্যে ইলেকট্রিক মোটরে ভর করে চালানো যায়। তখন পেট্রোল ইঞ্জিনটি একপ্রকার নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে। Pure EV Mode-এ Maruti Suzuki Grand Vitara ও Toyota Urban Cruiser Hyryder একটানা ২৫ কিমি পর্যন্ত চালানো যায়। অর্থাৎ কাছাকাছি যাত্রার ক্ষেত্রে এই মোডের জুড়ি মেলা ভার। কারণ এই ২৫ কিলোমিটার পথ চলতে গাড়ির মালিকের এক পয়সাও খরচ হয় না। এই দুর্মূল্যের বাজারে যেখানে পয়সা ছাড়া কিছুই মেলেনা, সেখানে ২৫ কিলোমিটার পথ সম্পূর্ণ বিনে পয়সায় চলা যায় শুনে অবাক লাগছে নিশ্চয়ই?

বিস্ময় লাগলেও এটাই সত্যি। কারণ এগুলি প্লাগ-ইন হাইব্রিড গাড়ি নয়। অর্থাৎ ইলেকট্রিক মোটরের জন্য ব্যাটারি চার্জ করাতে চার্জার গোজার প্রয়োজন নেই। পেট্রল ভার্সনে চলার সময় রিজেনারেটিভ প্রযুক্তির কামালে ব্রেক কষলে নিজে থেকেই চার্জ হয়ে যায়। যতবার ব্রেক কষা হবে, ব্যাটারির সাথে সংযুক্ত একটি ফ্লাইহুইল ঘুরতে আরম্ভ করবে। এর মাধ্যমেই একসময় সম্পূর্ণ চার্জ হয়ে যায় ব্যাটারিটি। ফলে বিনা পয়সায় ২৫ কিমি রাস্তা চলতে পারার কথাটা যে সম্পূর্ণ সত্য, তার প্রমাণ নিশ্চয়ই পাওয়া গেল। আসলে হাইব্রিড গাড়ির এটাই মজা। ইলেকট্রিক মোটরে বেশ কিছুটা পথ নিখরচায় ভ্রমণ করা যায়।

এখন কৌতুহলী মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, চার্জ ফুরিয়ে গেলে, মানে ২৫ কিলোমিটার যাত্রা হয়ে গেলে তখন কি হবে? এক্ষেত্রে জানিয়ে রাখি, তখন চালককে পেট্রোল ভার্সনে ট্রান্সমিশনটি পরিবর্তিত করতে হবে। এই পরিবর্তন এতটাই মসৃণ, যে গাড়িতে উপস্থিত যাত্রীদের একফোঁটাও অনুভূত হবে না। প্রসঙ্গত, Maruti Suzuki Grand Vitara ও Toyota Urban Cruiser Hyryder-এ শক্তিশালী ইলেকট্রিক মোটরের পরিপূরক হিসেবে রয়েছে ১.৫ লিটার পেট্রোল ইঞ্জিন। যখন পেট্রল ইঞ্জিনটি অ্যাটকিনসন সাইকেলের উপর ভর করে চলে, তখন এর আউটপুট ৯১ বিএইচপি শক্তি এবং ১২২ এনএম টর্ক। আবার ইলেকট্রিক মোটরটির আউটপুট ৭৯ বিএইচপি শক্তি এবং ১৪১ এনএম টর্ক। কিন্তু পেট্রোল ইঞ্জিন ও ইলেকট্রিক মোটরের সম্মিলিত আউটপুট ১১৪ বিএইচপি।

Grand Vitara ও Urban Cruiser Hyryder-তে Pure EV Mode ছাড়া রয়েছে ‘হাইব্রিড মোড’। এই মোডে প্রথমে ইলেকট্রিক মোটর এবং পরে পেট্রোল ইঞ্জিন কাজ করতে আরম্ভ করে। চালক যদি গাড়ির গতি বেশি বাড়াতে চান, সেক্ষেত্রে দুটি পাওয়ারট্রেন থেকেই সম্মিলিতভাবে শক্তি উৎপন্ন হয়। মোটর ও ইঞ্জিন একসাথে কাজ করার ফলে জ্বালানি পোড়ে কম।