Smartphone: আপনার ফোনের রঙ বলে দেবে আপনার ব্যক্তিত্ব, কি বলছে গবেষণা

একটি স্মার্টফোন কেনার আগে সেটির ফিচারের পাশাপাশি রঙ চয়নের বিষয়েও কী আপনি বিশেষ সচেতন? যদি তাই হয়, তাহলে আপনার নির্বাচিত মোবাইলের রঙ কিন্তু আপনার ব্যক্তিত্বের আয়না স্বরূপ হতে পারে। যেমন, যেসকল ব্যক্তি স্মার্টফোনকে নিছক একটি যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে দেখেন, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কালো এবং সাদার মতো প্রাথমিক রঙ বেছে নেন। তবে, এমন বহু মানুষ আছেন যারা রঙিন ব্যাক প্যানেল সমন্বিত স্মার্টফোন কিনতে পছন্দ করেন। আর এই কারণেই স্মার্টফোন নির্মাতা ব্র্যান্ডগুলি, আজকাল ফিচারের পাশাপাশি ব্যতিক্রমী রঙ দিয়ে গ্রাহক আকর্ষণ করতে বিশেষ আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আপনারা হয়তো ভাবছেন, স্মার্টফোনের ফিচার বা দাম ছেড়ে হঠাৎ রঙ নিয়ে এতো কেন মাতামাতি করছি আমরা! আসলে ব্যাপারটা হল, সম্প্রতি রঙ মনোবিজ্ঞানী (Color psychologist) ম্যাথিউ তার একটি ব্লগ পোস্টে ব্যাখ্যা করেছেন যে, কীভাবে একজন ব্যক্তির ফোনের রঙ তার ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তোলে। তাই আজ আমরা কোন রঙের মানে কি, সেই সম্পর্কে বিশদে জানাবো আপনাদের…

স্মার্টফোনের রঙ জানান দেবে আপনার ব্যক্তিত্ব, দেখে নিন কোন রঙের অর্থ কী

সাদা (White): ম্যাথিউয়ের মতে, যদি আপনার ফোনের রঙ সাদা হয়, তাহলে আপনি সম্ভবত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার প্রতি বিশেষ সচেতন। তিনি আরো বলেছেন যে, যারা সাদা রঙ পছন্দ করেন, তারা মূলত – অযথা বিচারে অনাগ্রহী, যেকোনো বিষয় নিয়ে খোলামেলা এবং উচ্চ মানসম্পন্ন হয়ে থাকেন। একই ভাবে, “সাদা রঙের সাথে সহজ-সরল ভাবের তুলনা করা হয়।” তাই কেউ এই রঙটি বেছে নিলে এটাই মনে হবে যে, তিনি সাধাসিধে একজন ব্যক্তি।

কালো (Black): কালো বা ব্ল্যাক রঙের প্রতি অনেকেই মোহিত। স্মার্টফোন কেনার সময়ে ব্যাপকভাবে এই রঙটি পছন্দ করার অন্যতম কারণ হল, কালো যেমন স্টাইলিশ এবং তেমনই মার্জিত একটি রঙ। এছাড়াও, কালো সবচেয়ে নিরাপদ রঙ, কারণ ফোনে আঙ্গুলের ছাপ এবং দাগ লাগলে তা বিশেষ গোচরে পরবে না। ম্যাথিউয়ের বিবৃতি অনুসারে, যারা কালো রঙ বাছাই করে, তাদের মধ্যে পরিশীলিততা, পেশাদারিত্ব, শক্তি এবং সুরুচিপূর্ণতার মতো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। পাশাপাশি, যারা ইন্টারনেট ছাড়া একটি ফোন খুঁজছেন তারাও অনেক সময় বেসিক কালার রূপে কালো বেছে নেনে৷ এক্ষেত্রে, “কালো রঙ নির্বাচন করা প্রাইভেসি ও একা থাকার আকাঙ্ক্ষাও হতে পারে। আবার, এটি বেঁচে থাকার প্রবৃত্তির একটি শক্তিশালী সূচকও হতে পারে,” বলে মনোবিজ্ঞানী তার রিপোর্টে দাবি করেছেন।

নীল (Blue): কালোর পর স্মার্টফোনে ‘মোস্ট সেলিং কালার’ হল ব্লু বা নীল। এখন বহু মোবাইল ইউজারই নীলাম্বরে মেতে আছেন দেখা যাচ্ছে। ফলে চাহিদার ভিত্তিতে এখন প্রায় সব সংস্থাই তাদের স্মার্টফোন সিরিজে নীল রঙকে উপস্থিত রাখছে। যেমন, আইফোন সিরিজেও নীল রঙকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, কেননা এটি – মার্জিত ভাব এবং আড়ম্বরপূর্ণতার ইঙ্গিত দেয়। ম্যাথিউ তার ব্লগে উল্লেখ করেছেন যে, যারা নীল রঙের ফোন কেনে, তারা সংরক্ষিত, শান্ত হন এবং ‘অ্যাটেনশন সিক’ বা মনোযোগ আকর্ষণ করতে পছন্দ করেন না। রঙটি – গভীর চিন্তন, সতর্কভাব, ভেবে-চিন্তে কাজ করা, দক্ষ এবং রক্ষণশীল হওয়ার সাথে জড়িত। ফলে, নীল রঙের ফোন মালিকের মধ্যে উল্লেখিত বৈশিষ্ট দেখা যেতে পারে। “কালো বা সাদা বেসিক রঙ বলে পরিচিত। তুলনায় নীল রঙ একটি ফোনের ক্ষেত্রে দেখতে পাওয়া বিরল, যা অনন্য হওয়ার আকাঙ্ক্ষা এবং মতামতের স্পষ্ট অভিব্যক্তির দিকেই ইঙ্গিত দেয়৷ আর যদি ফোনটি গাঢ় নীল রঙের হয় তবে, ব্যক্তিটি মনোযোগ আকর্ষণে ইচ্ছুক নয় এবং হতে পারে তার মধ্যে সৃজনশীল প্রতিভা বা প্রবণতা আছে।” এমনটাই মতামত ম্যাথিউ মহাশয়ের।

লাল (Red): লাল রঙ পছন্দ করেন, এমন মানুষ তুলনায় কমই দেখা যায়। তবে, আইফোন সিরিজের ক্ষেত্রে লাল বা রেড কালার ভ্যারিয়েন্টই সর্বাধিক বিক্রি হয়ে থাকে। যাইহোক, লাল রঙের সাথে- শারীরিক শক্তি, প্রতিযোগী ভাব, লালসা, আবেগপ্রবণতা এবং আক্রমণাত্মকতার সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া, ‘অ্যাটেনশন সিকার’ বা মনোযোগ আকর্ষণে আগ্রহী এবং বহির্মুখী ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ব্যক্তি লাল রঙ বিশেষ পছন্দ করে। এইসকল মানুষ সম্ভবত অভিব্যক্তিপূর্ণ হন এবং অন্য লোক তাদের সম্পর্কে কী ভাবছে তা নিয়ে চিন্তা করেন না।

সোনালী (Gold): স্বর্ণ বা সোনা অন্যতম দামি ধাতুগুলির একটি। ফলে, ম্যাথিউয়ের রিপোর্ট অনুসারে, সোনা-সম্পদে আসক্ত, মর্যাদা-সন্ধানী, উদার এবং বস্তুবাদীর গুণাবলীর সাথে যেই ব্যক্তিদের সম্পর্ক রয়েছে, তারা গোল্ড বা সোনালী রঙকে বেছে নিতে পছন্দ করেন। সেক্ষেত্রে, যাদের কাছে সোনালী রঙের ফোন আছে তারা নিজেদের সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে হয়তো সচেতন হন। এছাড়া, বিপরীতে থাকে মানুষদের কাছে, এই সকল ব্যক্তি “নিজেরা আর্থিকভাবে কতটা সফল এবং বিলাসবহুল জিনিষের প্রতি তাদের আকর্ষণ”, ব্যক্ত করতে পছন্দ করেন বলে দাবি করেছেন ম্যাথিউ।