ম্যানুয়াল নাকি অটোমেটিক? কোন গাড়ি আদর্শ, আপনাকে সঠিক পরামর্শ দিতে এই প্রতিবেদন

আজকালকার দিনে ম্যানুয়াল গিয়ারযুক্ত গাড়ির তুলনায় অটোমেটিক মডেলের চাহিদা বেড়েছে যথেষ্ট। অটোমেটিক গিয়ারযুক্ত গাড়ির ব্যবহারিক সুবিধা বেশি থাকার জন্যই অনেকেরই প্রথম পছন্দ এটি। তবে অটোমেটিক ট্রান্সমিশন সিস্টেম অনেক বেশি খরচ সাপেক্ষ হওয়ায় একটা বড় অংশের গ্রাহক আজও এর তুলনায় ম্যানুয়াল গাড়িকে অধিক প্রাধান্য দেন। আপনিও কি গাড়ি কেনার আগে অটোমেটিক নাকি ম্যানুয়াল কিনবেন তাই নিয়ে চিন্তিত? অটোমেটিক ট্রান্সমিশন এড়িয়ে ম্যানুয়াল গাড়ি কেনা কী কারণে গুরুত্বপূর্ণ তার পাঁচটি পয়েন্ট তুলে ধরা হল হল এই প্রতিবেদনে।

খরচ

মধ্যবিত্ত প্রধান ভারতে গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে খরচের বিষয়টি অনেক বেশি প্রাধান্য পায়। মনে রাখবেন অটোমেটিক ট্রান্সমিশন চালানো সহজতর হলেও এর সামগ্রিক কাঠামো অনেক বেশি জটিল হওয়ায় ম্যানুয়ালের তুলমায় প্রারম্ভিক মূল্য বেশ খানিকটা বেশি। এমনকি পরবর্তীকালে রক্ষণাবেক্ষণ করার ক্ষেত্রেও অটোমেটিক গাড়ি থাকলে আপনাকে অনেক বেশি ঝোক্কি পোয়াতে হবে আপনাকে। এ তুলনায় ম্যানুয়াল গিয়ার বক্স অনেক বেশি সহজ এবং পকেট ফ্রেন্ডলি।

নিয়ন্ত্রণ

ম্যানুয়াল গাড়িগুলির ক্ষেত্রে এর এক্সিলেটর, ক্লাচ এবং গিয়ার সবগুলোর উপরেই চালকের নিয়ন্ত্রণ থাকে অনেক বেশি। হাইওয়ে কিংবা শহরের রাস্তার ধরন অনুযায়ী চালক নিজের পছন্দমত এগুলি পরিচালনা করতে পারেন। এছাড়াও গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও ক্লাচ এবং এক্সিলেটরের যে অসাধারণ সমন্বয় সাধন করা যায় ম্যানুয়াল গাড়িতে তা কিন্তু কোনভাবেই অটোমেটিকে করা মুশকিল। উপরন্তু ম্যানুয়াল ভ্যারিয়েন্টে যত দ্রুত গাড়ি উচ্চগতি গ্রহণ করতে পারবে অটোমেটিকে কিন্তু সে তুলনায় বেশি সময় প্রয়োজন।

তেল সাশ্রয় ক্ষমতা

যে কোনো ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন সমৃদ্ধ গাড়িতে অটোমেটিক গাড়ির তুলনায় মাইলেজ খানিকটা বেশি পাওয়া যায়। এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো এই গাড়িগুলিতে গিয়ার এবং ক্লাচ এই দুইয়ের উপর চালকের নিয়ন্ত্রণ থাকে অনেক বেশি। এর ফলে গিয়ারের পরিবর্তন ইঞ্জিনের আরপিএমের সঙ্গে সঠিক তালে করতে পারলে ম্যানুয়াল গাড়িতে কিন্তু তুলনামূলক বেশি মাইলেজ পাওয়া যাবে। এমনিতেও ম্যানুয়াল ভ্যারিয়েন্টের গাড়িগুলির ওজন অটোমেটিক সংস্করণের তুলনায় খানিকটা কম।

আরামদায়ক চালানোর অনুভূতি

একথা অস্বীকার করার কোনো জায়গা নেই যে ম্যানুয়াল গাড়িগুলিকে চালানোর মজা কিন্তু আলাদাই। এক্ষেত্রে নিজের পছন্দমত গিয়ারের পরিবর্তন এবং অন্যান্য সমস্ত কিছু চালকের নিয়ন্ত্রণে থাকায় সামগ্রিক ভাবে এটি অনেক বেশি গাড়ির সঙ্গে একাত্ম হতে সাহায্য করে, যা কিন্তু অটোমেটিক গাড়িতে পাওয়া যায় না।

সহজলভ্যতা

ভারতে বর্তমানে অটোমেটিক ট্রান্সমিশন মডেলের চাহিদা বাড়লেও ম্যানুয়াল গিয়ারযুক্ত গাড়ির গুরুত্ব আগের মতই অপরিবর্তিত রয়েছে। সবকটি মডেলের মধ্যেই ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন ভার্সনের সংখ্যা বরাবরই বেশি এবং প্রচুর শোরুমে সহজলভ্য। সর্বোপরি ম্যানুয়াল গাড়ি নিয়ে রাস্তায় কোনো সমস্যা তৈরি হলে এর মেকানিক পাওয়া অনেকটাই সহজ।

বর্তমানে অটোমেটিক ট্রান্সমিশনের মধ্যেও বিভিন্ন ধরনের প্রকারভেদ দেখতে পাওয়া যায়- Clutchless, CVT, DCT ইত্যাদি। সাধারণ অটোমেটিক ট্রান্সমিশনের তুলনায় এগুলি অনেক স্মুথ পারফরমেন্স প্রদান করার ক্ষমতা রাখলেও ম্যানুয়াল মডেলের তুলনায় এই ধরনের ফিচারযুক্ত গাড়ির দাম লক্ষণীয়ভাবেই বেশি।