সরকারের সাহায্য পেলেই ঘুরে দাঁড়াতে পারে BSNL, প্রমাণ করছে পরিসংখ্যান

4G পরিষেবার দেখা নেই অথচ গ্রাহক ভিত্তিক বাজার শেয়ার বাড়িয়ে দেশের টেলিকম মহলকে তাক লাগিয়ে দিলো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড! সঠিক পড়ছেন, গত চারটি অর্থবর্ষে খুব সামান্য পরিমাণে হলেও বিএসএনএল (BSNL)-এর গ্রাহক সংখ্যা বাড়তে দেখা গিয়েছে। হাজারো সংকটের মুখেও এই বৃদ্ধি বিএসএনএলকে বাড়তি অক্সিজেন যোগাচ্ছে। উপযুক্ত সরকারি সাহায্য ও সমর্থন পাওয়া গেলে তাদের পক্ষেও যে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব, পরিসংখ্যান দেখিয়ে BSNL কর্মীরা অন্তত তেমনটাই দাবী করছেন। আসলে সাধারণ অবস্থাতেই যদি গ্রাহক সংখ্যায় উন্নতি ঘটে, তবে নিজস্ব 4G নেটওয়ার্ক পরিকাঠামো গড়ে তোলা গেলে সংস্থার পক্ষে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকা অনেক সহজ হবে। তাই এই মুহূর্তে BSNL, 4G নেটওয়ার্ক লঞ্চের ব্যাপারটিকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে।

4G পরিষেবা লঞ্চের জন্য বিএসএনএল আপাতত সরকারি অনুমতি পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের তরফে সবুজ সঙ্কেত মিললে একমাত্র তখনই সংস্থাটি তাদের 4G সংক্রান্ত কাজকর্ম এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে গত চার বছরের গ্রাহক ভিত্তিক বাজার শেয়ার বৃদ্ধির হিসেব সংস্থাটির পক্ষে ইতিবাচক হতে পারে। ২০১৭ অর্থবর্ষে তাদের গ্রাহক ভিত্তি ৮.৬ শতাংশ বাজার শেয়ারের উপরে দাঁড়িয়ে ছিলো। চার বছর পরে ২০২১ অর্থবর্ষে এই বাজার শেয়ার বেড়ে ১০.০৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ফলে এই বৃদ্ধির উপরে জোর দিয়েই তারা সরকারের কাছে 4G বিষয়ক অনুমতি দাবী করতে পারে।

এনডিটিভি প্রফিটের (NDTV Profit) পেশ করা পরিসংখ্যান থেকে এটা স্পষ্ট যে কেবলমাত্র একটি অর্থবর্ষে নয়, বরং ২০১৭ সালের পর থেকে নিয়মিতভাবে বিএসএনএল ভালো ফলাফল করে চলেছে। এক্ষেত্রে অনেকে তাদের সস্তা পরিষেবার প্রশংসা করেছেন। কিন্তু দেশের প্রধান টেলিকম গোষ্ঠীগুলি যেখানে দ্রুতগতির 4G পরিষেবার দ্বারা গ্রাহক আকর্ষণ করেছে, সেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি কোন জাদু বলে পুরোনো নেটওয়ার্ক নিয়ে বৃদ্ধির হার বজায় রাখলো, সেটা অনেকেরই মাথায় ঢুকছে না।

বিগত বছরগুলির মধ্যে ২০১৭ সালে বিএসএনএলের গ্রাহক ভিত্তিক বাজার শেয়ারের পরিমাণ যে ৮.৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছিলো, সে কথা আগেই উল্লেখ করেছি। এরপর ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালে শেয়ার বেড়ে হয় যথাক্রমে ৯.৪, ৯.৯ এবং ১০.৩ শতাংশ। এরপর ২০২১ অর্থবর্ষে তাদের ব্যবসা কিছুটা মার খায় এবং বাজার শেয়ার সামান্য নীচে নামে (১০.০৩ শতাংশ)।

বর্তমানে BSNL দেশজুড়ে হাইব্রিড 4G পরিষেবা সরবরাহের কথা ভাবছে। এক্ষেত্রে তারা বিদেশী সংস্থার পাশাপাশি ভারতীয় ভেন্ডারদের সুযোগ দিতে আগ্রহী। আর সেকারণেই গত ১লা জুলাই, ২০২১ তারিখে সংস্থাটি পাঁচজন বিডারের (Bidder) উদ্দেশ্যে লেটার অফ ইনটেন্ট (LoI) জারি করেছে। তবে পুরো কাজের গতি প্রকৃতি দেখার পর আমাদের এটাই মনে হয় যে আগামী বছরের আগে BSNL-এর 4G পরিষেবা প্রকাশ্যে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন