Esports: যুবসমাজের রোজগারের নতুন পথ, ই-স্পোর্টস কে স্বীকৃতি দিল ভারত সরকার

ছোটোবেলায় গেম খেলতে কমবেশি সকলেই ভালোবাসেন। কিন্তু বর্তমানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে অনলাইন ভিডিও গেমিংয়ের প্রতি বিশেষভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছে তরুণ প্রজন্ম। ইন্টারনেটের দৌলতে এবং প্রযুক্তির সচ্ছলতার কারণে আজকাল পিসি, মোবাইল, ল্যাপটপের মাধ্যমে গেমিংয়ের দুনিয়ায় মগ্ন হয়ে রয়েছে যুবসমাজ। এর সুবাদে গোটা বিশ্বে হালফিলে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়েছে ই-স্পোর্টস (Esports)। উল্লেখ্য যে, গেমিং দুনিয়ার হালহকিকত সম্পর্কে যারা ওয়াকিবহাল, তাদের মধ্যে অনেকেই এই শব্দটির সঙ্গে পরিচিত হলেও বহু মানুষের কাছেই এখনও এই বিষয়টি অজানাই থেকে গিয়েছে। যারা জানেন না তাদেরকে বলে রাখি, অনলাইন ভিত্তিক কম্পিউটার কিংবা মোবাইল গেমিং টুর্নামেন্টগুলিকে বলা হয় ইলেকট্রনিক স্পোর্টস বা ই-স্পোর্টস। মূলত পশ্চিমা দেশগুলিতে বড়ো বড়ো স্টেডিয়ামে জাঁকজমকভাবে এসব টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। এত জনপ্রিয়তার কারণে এবার ই-স্পোর্টসকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিল ভারত সরকার। অর্থাৎ সহজে বললে, ক্রিকেট কিংবা হকির মতো এখন দেশের মূলধারার ক্রীড়া শাখায় অনলাইন গেমিংকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, করোনা মহামারির সময় গোটা বিশ্বে যে সকল শিল্প খুব দ্রুত এগিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল ই-স্পোর্টস। তবে অনলাইন গেম খেললে সময়ের অপচয়, পড়াশোনার ক্ষতি ও মানসিক সমস্যা হয় – এসব ব্যাপার নিয়েই মূলত সব জায়গায় আলোচনা হতে থাকে। কিন্তু এই শিল্প যে অর্থ আয়ের এক স্বর্ণখনি হতে পারে, সে বিষয়ে অনেকেরই এখনও কোনো ধারণাই নেই। তবে তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে ই-স্পোর্টস দিন-কে-দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। বর্তমানে অনেকেই পেশা হিসেবে ই-স্পোর্টসকে বেছে নিচ্ছেন, এবং অনলাইনে গেম খেলে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা রোজগারও করছেন বহু মানুষ। এমত পরিস্থিতিতে এটির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাওয়া যে তরুণ প্রজন্মকে আরও বহুলাংশে উদ্বুদ্ধ করবে, সেকথা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য।

সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, তথ্য প্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিক্স এবং ক্রীড়া মন্ত্রককে নানাবিধ স্পোর্টস ইভেন্টে ই-স্পোর্টসকে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবার থেকে একটি অনুমোদিত খেলা হিসেবে বিবেচিত হবে অনলাইন গেমিং। শুধু তাই নয়, আগামী দিনে ভারতে এশিয়ান গেমস এবং কমনওয়েলথ গেমসের মতো দর্শকে ভরা স্টেডিয়ামে এই ধরনের টুর্নামেন্টেরও আয়োজন করা হবে। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে, অন্যান্য খেলার মতো ভিডিও গেমের ক্ষেত্রেও ক্রীড়াবিদরা তাদের কায়িক শ্রম এবং বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করেন, যাকে কোনোভাবেই খাটো করে দেখা উচিত নয়। তাই বর্তমানে বিভিন্ন ঘরানার গেমগুলির সাথে রীতিমতো জোর টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা রাখে অনলাইন গেমিং।

এই প্রসঙ্গে ভারতের ই-স্পোর্টস ফেডারেশনের ডিরেক্টর ও এশিয়ান ই-স্পোর্টস ফেডারেশনের (AESF) সহ-সভাপতি লোকেশ সুজি (Lokesh Suji) জানিয়েছেন, নতুন বছরের প্রাক্কালে এটি নিঃসন্দেহে একটি দুর্দান্ত খবর। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ই-স্পোর্টস ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হলেও ভারতে এখনও এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা এই শব্দটির সঙ্গে একেবারেই পরিচিত নয়। তবে আপামর জনগণের বিষয়টি সম্পর্কে জানা একান্ত আবশ্যক। ভিডিও গেম খেলেও যে এখন সৎপথে প্রচুর টাকা আয় করা যেতে পারে, এটা সকলে জানতে পারলে যুবসমাজের জন্য রোজগারের একটা নতুন রাস্তা খুলে যাবে। উল্লেখ্য যে, এশিয়ান গেমসের পাশাপাশি চলতি বছরে কমনওয়েলথ গেমসেও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ই-স্পোর্টস। সেক্ষেত্রে অন্যান্য বিভাগের মতো ই-স্পোর্টস মারফতও আগামী দিনে ভারতে প্রচুর পদক আসবে বলে আশা করা যেতে পারে।