দামী প্রিমিয়াম ফোনকেও ধুলোয় মিশিয়ে দেবে, 4 ফিচার্সেই বাজিমাত Xiaomi 13T সিরিজের

প্রায় প্রতিটি শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড বর্তমানে ফ্ল্যাগশিপ-কিলার ফোন বিক্রি করে। এই ধরনের ফোনগুলি সাধারণত কম দামে প্রিমিয়াম ফিচার্স অফার করার কারণে ফ্ল্যাগশিপ-কিলার হিসাবে পরিচিত। শাওমির কথা বললে, তারা Mi 1 মডেলটির হাত ধরে ফ্ল্যাগশিপ কিলার স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হিসাবে যাত্রা শুরু করেছিল৷ যদিও উত্থানের সাথে সাথে সংস্থার নম্বর সিরিজ iPhone এবং Galaxy S-এর মতো ট্রু ফ্ল্যাগশিপ লাইনআপে পরিণত হয়েছে৷ তাই, কোম্পানি নতুন ফ্ল্যাগশিপ কিলার হিসাবে ২০১৯ সালে Xiaomi T সিরিজ (আগে Mi T সিরিজ নামে পরিচিত) চালু করেছে। এই ফোনগুলি নিয়ম করে প্রতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে লঞ্চ হয়।

সম্প্রতি, কোম্পানিটি স্ট্যান্ডার্ড এবং প্রো মডেল সমন্বিত Xiaomi 13T সিরিজ গ্লোবাল মার্কেটে লঞ্চ করেছে। এগুলির দাম যথাক্রমে ৬৪৯ ইউরো (প্রায় ৫৬, ৮০০ টাকা) এবং ৭৯৯ ইউরো (প্রায় ৬৯,৯৩৫ টাকা) থেকে শুরু হয়। এই দাম হওয়া সত্ত্বেও, ডিভাইসগুলি বেশ কয়েকটি প্রিমিয়াম ফিচার সহ এসেছে, যা সাধারণত খুব দামী ফ্ল্যাগশিপগুলিতেই দেখা যায়। চলুন দেখে নেওয়া যাক কিভাবে Xiaomi 13T এবং Xiaomi 13T Pro বাজারের অন্যান্য ফ্ল্যাগশিপ কিলার স্মার্টফোনকে টেক্কা দিচ্ছে।

১. লাইকা ক্যামেরা

শাওমি গত বছর থেকে তাদের ফ্ল্যাগশিপ এবং ফোল্ডেবলে লাইকা (Leica)-টিউনড ক্যামেরা ব্যবহার করছে। শাওমি ১৩টি সিরিজ হল কোম্পানির প্রথম ফ্ল্যাগশিপ কিলার ফোন, যা লাইকা ক্যামেরার সাথে এসেছে। শাওমি ১৩টি এবং শাওমি ১৩টি প্রো – উভয়েরই লাইকা টিউনিং সহ একই ক্যামেরা হার্ডওয়্যার রয়েছে। তবে এগুলির আইএসপি (ISP)-গুলি ভিন্ন, কারণ স্ট্যান্ডার্ড ভ্যারিয়েন্টটি প্রো সংস্করণে থাকা মিডিয়াটেক ডাইমেনসিটি ৯২০০ প্লাস চিপসেটের তুলনায় কম শক্তিশালী ডাইমেনসিটি ৮২০০-আল্ট্রা চিপ দ্বারা চালিত।

হ্যান্ডসেটগুলিতে থ্রি-লেন্স সিস্টেম রয়েছে, যার মধ্যে একটি ১৪ মিলিমিটার ফোকাল লেন্থ সহ প্রাইমারি লেন্স, একটি ১৫ মিলিমিটার ফোকাল লেন্থের আল্ট্রাওয়াইড লেন্স এবং একটি ৫০ মিলিমিটার ফোকাল লেন্থ সহ ২x টেলিফটো লেন্স বিদ্যমান। প্রধান এবং জুম ক্যামেরা হল এফ/১.৯ অ্যাপারচার সহ ৫০ মেগাপিক্সেলের সেন্সর। তবে, প্রাইমারি সেন্সর আকারে বড় এবং এতে অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন (OIS) আছে। আর, আল্ট্রাওয়াইড লেন্সটি এফ/২.২ অ্যাপারচার সহ একটি ১২ মেগাপিক্সেলের সেন্সর ব্যবহার করে। সবশেষে, ফ্রন্ট ক্যামেরাটি একটি ২০ মেগাপিক্সেলের সেন্সর যা এফ/২.২ লেন্সের সাথে যুক্ত।

২.ফিচার-সমৃদ্ধ ডিসপ্লে

ক্যামেরার মতই, Xiaomi 13T এবং Xiaomi 13T Pro-এর ডিসপ্লেও প্রচুর প্রিমিয়াম ফিচার অফার করে৷ ডিসপ্লেটি ২,৭১২ x ১,২২০ পিক্সেল (1.5K) রেজোলিউশন, ৪৪৬ পিপিআই এবং ১২-বিট কালার ডেপ্থ অফার করে। প্যানেলটি ১৪৪ হার্টজ রিফ্রেশ রেট সাপোর্ট করে। কনটেন্টের ওপর নির্ভর করে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৩০ হার্টজ, ৬০ হার্টজ, ৯০ হার্টজ, ১২০ হার্টজ এবং ১৪৪ হার্টজ রিফ্রেশ রেটে পরিবর্তিত হয়।

কেন্দ্রীভূত পাঞ্চ-হোল ফ্ল্যাট স্ক্রিন এইচডিআর১০+ এবং ডলবি ভিশন কন্টেন্ট চালাতে পারে। এটি ২,৬০০ নিট লোকাল পিক ব্রাইটনেস লেভেল অর্জন করতে পারে। হাই ব্রাইটনেস মোডে, গ্লোবাল পিক ব্রাইটনেস ১,২০০ নিট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। ডিসপ্লেটি ডিসিআই-পি৩ কালার গ্যামটের ১০০% কভার করতে পারে। সবশেষে, স্ক্রিনটি চোখের জন্য সুরক্ষিত ২,৮৮০ হার্টজ পিডাব্লিউএম ডিমিং অফার করে এবং এতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরও রয়েছে।

৩.সাধারণ ডিজাইন

বেশিরভাগ ফ্ল্যাগশিপ কিলার স্মার্টফোনে আকষর্ণীয় ডিজাইন দেখা যায়। কারণ এগুলি সাধারণত এশিয়ায় সীমাবদ্ধ এবং তরুণ প্রজন্মের ক্রেতাদের লক্ষ্য করে। তবে এক্ষেত্রে Xiaomi 13T সিরিজটি ভিন্ন, কারণ এটিতে সাধারণ ডিজাইন রয়েছে। আরও ভাল আর্গোনমিক্সের জন্য এতে ফ্ল্যাট ফ্রেম এবং সামান্য কার্ভড রিয়ার প্যানেল রয়েছে। আলপাইন ব্লু কালার অপশনের রিয়ার প্যানেলটি ভিগান লেদার দ্বারা নির্মিত। অন্যদিকে, ব্ল্যাক এবং মিডো কালার অপশন গ্লসি গ্লাস ব্যবহার করে। এছাড়া, হ্যান্ডসেটগুলি ধুলো এবং জল প্রতিরোধের জন্য আইপি৬৮ (IP68)-রেটযুক্ত। অর্থাৎ, Xiaomi 13T সিরিজের ফোনগুলি ১.৫ মিটার জলের নীচে ৩০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

৪. দীর্ঘমেয়াদী সফ্টওয়্যার সাপোর্ট

Xiaomi 13T সিরিজটি কোম্পানির প্রথম স্মার্টফোনগুলির মধ্যে অন্যতম, যা লেটেস্ট সফ্টওয়্যার সাপোর্ট নীতির আওতায় পড়ে। সুতরাং, এগুলি লঞ্চের পর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত সফ্টওয়্যার আপডেট পাবে। এই ডিভাইসগুলি চারটি অ্যান্ড্রয়েড আপগ্রেড এবং ৫ বছরের সিকিউরিটি আপডেটের জন্য যোগ্য৷ যেহেতু, ফোন দুটি অ্যান্ড্রয়েড ১৩-এর সাথে লঞ্চ হয়েছে, তাই এগুলি অ্যান্ড্রয়েড ১৭ পর্যন্ত আপডেট পাবে। শাওমি তাদের প্রিমিয়াম ফোনের জন্য প্রতি দুই মাসে বা প্রতি ত্রৈমাসিকে সিকিউরিটি আপডেট প্রকাশ করে থাকে। তাই Xiaomi 13T এবং Xiaomi 13T Pro-এর ক্ষেত্রেও এটি হওয়া সম্ভব। গ্রাহকরা ২০২৮ সালের দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত হ্যান্ডসেটগুলিতে সফ্টওয়্যার সাপোর্ট আশা করতে পারেন।