TRAI MNP: এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য নেটওয়ার্কে গেলে আর অফার পাবে না গ্রাহকরা

দেশের অগ্রগণ্য টেলিকম অপারেটরদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ জারি করল ট্রাই (TRAI)। এর ফলে অন্য কোম্পানীর ঘর ভেঙে নিজেদের গ্রাহক সংখ্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রে টেলিকম অপারেটরগুলি কিছুটা অসুবিধায় পড়বেন। কারণ নতুন নিয়ম অনুযায়ী এবার থেকে তারা আর লোভনীয় এমএনপি অফারের টোপ দেখিয়ে গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করতে পারবে না। এভাবে পৃথক এমএনপি অফার প্রদানের মাধ্যমে নম্বর পোর্টেবলিটির ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা যে, দেশের টেলিকম আইনের সম্পূর্ণ বিপরীত সেটা টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (Telecom Regulatory Authority of India) বা ট্রাই স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে।

MNP-ভিত্তিক অফার টেলিকম নীতি ও আইন লঙ্ঘন করছে, জানিয়ে দিলো TRAI

আসলে প্রতিযোগিতার বাজারে গ্রাহক বাড়ানোর জন্য আমরা দেশের প্রধান টেলিকম সংস্থাগুলিকে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে দেখি। এর মধ্যে সমস্ত পদ্ধতি যে টেলিকম নীতির পরিপূরক তা নয়। যেমন অনেক ক্ষেত্রে অপর সংস্থার গ্রাহককে লুব্ধ করতে একটি কোম্পানি আকর্ষণীয় পোর্টেবলিটি অফার প্রকাশ্যে আনে। শুধুমাত্র এমএনপি গ্রাহকদের জন্য তারা এই অফারগুলিকে উপলব্ধ রাখে। ট্রাইয়ের দাবী এই ধরনের অফার টেলিকমিউনিকেশন ট্যারিফ অর্ডার বা টিটিও – ১৯৯৯ (TTO-1999) সহ দেশের টেলিকম নিয়ামক সংস্থার অন্যান্য নিয়ম-নীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তাই সংস্থাগুলির এভাবে গ্রাহক আকর্ষণের প্রক্রিয়াকে কোনোভাবেই সমর্থন করা যায়না।

শুধু এটুকুই নয় টেলিকম অপারেটরদের ট্রাই কেবলমাত্র সেই সমস্ত ট্যারিফ ও অফার সরবরাহের জন্য অনুমতি দিয়েছেহ যারা টেলিকম নিয়ামক সংস্থার সমস্ত নীতি ও নির্দেশ মান্য করে। দেশে টেলিকম বাণিজ্যের বর্তমান হাল-হকিকত খতিয়ে দেখে ট্রাইয়ের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ যে অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে, সেটা প্রযুক্তিমহলের সকলেই স্বীকার করছেন।

ইটি টেলিকমের (ET Telecom) একটি প্রতিবেদনে ট্রাইয়ের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য উঠে এসেছে। তার কথায় এয়ারটেল (Airtel), জিও (Jio) ও ভিআই (Vi) তিনটি সংস্থাই বর্তমানে পক্ষপাতমূলক এমএনপি সুবিধা প্রদানের জন্য একে অপরকে দায়ী করে অভিযোগ পেশ করছে। আলাদাভাবে প্রভাব খাটানোর জন্য সংস্থাগুলি নিজস্ব চ্যানেল পার্টনারের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে অতিরিক্ত সুবিধা পৌঁছে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। ট্রাইয়ের নয়া নির্দেশিকা সাফ জানাচ্ছে যে চ্যানেল পার্টনার, ডিস্ট্রিবিউটর, রিটেলার ও থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশনগুলি অনুমোদনপ্রাপ্ত না হওয়ায়, তাদের মাধ্যমে বিশেষ সুবিধা পৌঁছে দেওয়া সম্পূর্ণ অনুচিত। এভাবে নীতি নিয়ামক আইনগুলি লঙ্ঘন করা থেকে তারা দেশের টেলিকম সংস্থাগুলিকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

একথা উল্লেখযোগ্য যে সম্প্রতি নতুন গ্রাহক আকর্ষণের ক্ষেত্রে এয়ারটেল (Airtel) ও জিও’র (Jio) পারস্পরিক দ্বৈরথ তুমুলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে ক্রমাগত গ্রাহক হারিয়ে ভিআই (Vi) রীতিমতো সংকটের সম্মুখীন। চলতি বছরের জুন ত্রৈমাসিকে প্রায় ১২.৩ মিলিয়ন গ্রাহক সংস্থার পরিষেবা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে এয়ারটেল (Airtel) ও জিও’র (Jio) গ্রাহক-ভিত্তি বাড়ায় এটা স্পষ্ট যে ভোডাফোন-আইডিয়া (Vodafone-Idea) উপভোক্তারা বিকল্প পরিষেবা প্রদানকারী বেছে নিতে কোনরকম দ্বিধা করছেন না।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন