বড় সুখবর! 4G ফোনের থেকেও কম দামে 5G ফোন আনছে Samsung

ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এখন শিকড়ের মতো ছড়িয়ে পড়ছে 5G নেটওয়ার্কের জাল। ইতিমধ্যেই এদেশের একাধিক শহরের মানুষ নিজেদের পঞ্চম প্রজন্মের কানেক্টিভিটিযুক্ত হ্যান্ডসেটে এই দুরন্ত গতির নেট পরিষেবা ব্যবহারের মজা উপভোগ করতে সক্ষম হচ্ছেন। যদিও প্যান ইন্ডিয়া স্তরে কবে এই সার্ভিস উপলব্ধ হবে, তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না; তবে দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলি যেভাবে অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে, তাতে আশা করা যেতে পারে যে, ২০২৪ সালের মধ্যেই হয়তো সারা দেশবাসী নব্য প্রজন্মের নেটওয়ার্ক পরিষেবা ব্যবহার করতে পারবেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই হাই-স্পিড ইন্টারনেট ব্যবহারের মজা উপভোগ করার আশায় ইদানীংকালে পঞ্চম প্রজন্মের কানেক্টিভিটিযুক্ত হ্যান্ডসেটের প্রতি গ্রাহকদের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছে। তবে সাশ্রয়ী মূল্যে একটি ব্র্যান্ড-নিউ 5G স্মার্টফোন কিনতে চাইলেই দেখা দিচ্ছে ঘোরতর সমস্যা!

আসলে ব্যাপারটা হল, চলতি সময়ে ভারতীয় মুদ্রা এবং আমেরিকান ডলারের মূল্য ব্যাপক হারে ওঠানামা করায় ভারতের স্মার্টফোন মার্কেটে বেশ ভালোরকম অর্থনৈতিক ডামাডোলের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে পর্যাপ্ত মুনাফা হবে না বলে অনুমান করায় চীনা হ্যান্ডসেট নির্মাতা সংস্থাগুলি ধীরে ধীরে এদেশের মার্কেটে বাজেট স্মার্টফোন নিয়ে আসার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। ফলে দেখা যাচ্ছে যে, বর্তমানে এদেশের বাজারে উপলব্ধ ১৫,০০০ টাকার কমদামি স্মার্টফোনের বেশিরভাগই ৪জি হ্যান্ডসেট। উল্লেখ্য, এই রেঞ্জে কোনো নামজাদা কোম্পানির পঞ্চম প্রজন্মের কানেক্টিভিটিযুক্ত স্মার্টফোন ভারতের মার্কেটে প্রায় নেই বললেই চলে। উল্লেখ্য, ভালোরকম মুনাফা অর্জনের আশায় হালফিলে বেশিরভাগ স্মার্টফোন কোম্পানিগুলি পরিকল্পনা করেছে যে, হাতের মুঠোয় একটি ৫জি ডিভাইস পেতে হলে ইউজারদেরকে অন্ততপক্ষে ২০,০০০ টাকা ব্যয় করতেই হবে। সেক্ষেত্রে দুরন্ত গতির নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা যে অনেকের পক্ষেই অসম্ভব হয়ে উঠবে, সেকথা বলাই বাহুল্য। তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই, কেননা গ্রাহকদের মুশকিল আসান করতে এবার মাঠে নেমেছে স্যামসাং (Samsung)।

সাশ্রয়ী মূল্যে এদেশে একাধিক 5G স্মার্টফোন লঞ্চ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে Samsung

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ২০২২ সালের প্রথমার্ধ থেকে অর্থাৎ আনুষ্ঠানিকভাবে ৫জি পরিষেবা ভারতে চালু হওয়ার আগেই স্যামসাং কিন্তু এদেশের ৫জি স্মার্টফোন সেক্টরে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করে দিয়েছিল। গত বছর সংস্থাটি একগুচ্ছ বাজেট রেঞ্জের ৫জি হ্যান্ডসেট মার্কেটে এনেছে। ফলে ১০,০০০ টাকার কমদামী হোক কিংবা ১.৫ লক্ষ টাকা মূল্যের অধিক – দক্ষিণ কোরিয়ান টেক জায়েন্টটির ঝুলিতে এখন সমস্ত রেঞ্জের স্মার্টফোন বিদ্যমান। সেক্ষেত্রে ভারতের সকল শ্রেণীর মানুষই যাতে একটি পঞ্চম প্রজন্মের কানেক্টিভিটিযুক্ত স্মার্টফোন হাতের মুঠোয় পেতে সক্ষম হন, সেজন্য সংস্থাটি হালফিলে আপামর জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা ভারতে সাশ্রয়ী মূল্যের ৫জি হ্যান্ডসেট লঞ্চ করা অব্যাহত রাখবে। সেইসাথে চলতি বছরে একাধিক কমদামি ৪জি (4G) স্মার্টফোনও বাজারে আসবে বলে জানিয়েছে স্যামসাং৷ অর্থাৎ সহজে বললে, চীনা কোম্পানিগুলির মতো এদেশের বাজেট স্মার্টফোনের বাজার ছাড়তে মোটেই রাজি নয় দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানিটি। পাশাপাশি, ২০২৩ সালে ইউজারদেরকে ‘ভ্যালু ফর মানি’ ৫জি স্মার্টফোন অফার করার দিকে সংস্থাটি আগ্রাসীভাবে মনোনিবেশ করবে বলেও কথা দিয়েছে।

কম খরচে আপামর দেশবাসীকে দুরন্ত গতির 5G পরিষেবা ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে চায় Samsung

প্রসঙ্গত, স্যামসাং ইন্ডিয়ার মোবাইল বিজনেসের সিনিয়র ডিরেক্টর আদিত্য বাব্বর (Aditya Babbar) জানিয়েছেন যে, বাজেট হোক কিংবা মিড-রেঞ্জ বা প্রিমিয়াম স্মার্টফোন – সেরা ব্র্যান্ড হিসেবে সকল শ্রেণীর মানুষের জন্য সর্বদা হাজির থাকবে স্যামসাং। পকেটের ওপর বিন্দুমাত্র চাপ না ফেলে যাতে আপামর ভারতবাসী দুরন্ত গতির ৫জি নেটওয়ার্ক ব্যবহারের মজা উপভোগ করতে পারেন, তার জন্য সংস্থাটি আগামী দিনে একাধিক সাশ্রয়ী মূল্যের ৫জি হ্যান্ডসেট লঞ্চ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, স্যামসাং গত মাসের শুরুতে ভারতে গ্যালাক্সি এ (Galaxy A) সিরিজের অধীনে দুটি বাজেট রেঞ্জের নতুন ৫জি ডিভাইস লঞ্চ করেছে – গ্যালাক্সি এ১৪ ৫জি (Galaxy A14 5G) এবং গ্যালাক্সি এ২৩ ৫জি (Galaxy A23 5G)। উল্লেখ্য, এদেশে স্যামসাং গ্যালাক্সি এ১৪ ৫জি ফোনের বেস ভ্যারিয়েন্টের দাম ১৪,৯৯৯ টাকা। অন্যদিকে, গ্যালাক্সি এ২৩ ৫জি-এর বেস মডেলটি কিনতে হলে ক্রেতাদের ২০,৯৯৯ টাকা খরচ করতে হবে। ইতিমধ্যেই অফলাইন এবং অনলাইন উভয় প্ল্যাটফর্মেই উক্ত ডিভাইস দুটির বিক্রি শুরু হয়ে গিয়েছে।

এবার দিনে মাত্র ৪৪ টাকা খরচ করলেই হাতে পাওয়া যাবে Samsung-এর একটি ব্র্যান্ড-নিউ 5G স্মার্টফোন

মি. বাব্বর আরও জানিয়েছেন যে, সাশ্রয়ী মূল্যে হ্যান্ডসেট লঞ্চ করার পাশাপাশি স্যামসাংয়ের ডিভাইসগুলি যাতে ভারতের সমস্ত জায়গায় অতি অনায়াসে ক্রেতারা কিনতে সক্ষম হন, সেদিকেও সংস্থাটি বিশেষ নজর রেখেছে। এর সুবাদে আগামী দিনে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে আরও অধিক সংখ্যক স্টোরে কোম্পানির ডিভাইস উপলব্ধ হবে। শুধু তাই নয়, পকেটের উপর বিন্দুমাত্র চাপ না ফেলে খরিদ্দাররা যাতে সংস্থার একটি ব্র্যান্ড-নিউ ৫জি স্মার্টফোন কিনতে সক্ষম হন, তার জন্য চলতি সময়ে স্যামসাং একটি আকর্ষণীয় ইএমআই (EMI) স্কিম নিয়ে হাজির হয়েছে। এর সুবাদে প্রতিদিন মাত্র ৪৪ টাকা বা মাসে ১৩২০ টাকা খরচ করলেই হাতের মুঠোয় একটি নতুন ৫জি ডিভাইস পেয়ে যাবেন ইউজাররা।

বাব্বরের কথায়, অদূর ভবিষ্যতে Samsung-এর 4G হ্যান্ডসেটের তুলনায় 5G স্মার্টফোনের সস্তা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল৷ উল্লেখ্য, সংস্থার স্মার্টফোন বিজনেসের ৭৫ শতাংশ 5G ডিভাইসের মাধ্যমে করাই হল দক্ষিণ কোরিয়ান টেক জায়েন্টটির চলতি বছরের অন্যতম প্রধান ব্যবসায়িক স্ট্র্যাটেজি। বাব্বরের মতে, উক্ত পরিকল্পনাটিকে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে মেনে চললে Samsung নিশ্চিতভাবে এ বছর দুর্দান্ত ব্যবসা করতে পারবে। সেক্ষেত্রে উক্ত Galaxy A সিরিজের নবাগত দুটি ডিভাইসের হাত ধরেই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে বলে চরম আশাবাদী তিনি।