হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কোনো পোস্টের দায় নেই অ্যাডমিনের, জানালো বোম্বে হাইকোর্ট

প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেটের বলে বলিয়ান হয়ে, কয়েক বছর আগেই টেক্সট মেসেজ অপশনকে দুয়োরানির জায়গায় নিয়ে গেছে WhatsApp! রোজকার জীবনে এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং মাধ্যমটির ব্যবহার এতই বেড়েছে যে, স্মার্টফোনে অন্য কোনো অ্যাপ না থাকলেও WhatsApp অ্যাপ্লিকেশনটি অবধারিত হয়ে পড়েছে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে, মাঝেমধ্যেই বিতর্ক বা সমালোচনার শিকার হচ্ছে Facebook-এর মালিকানাধীন এই মাধ্যমটি – নেপথ্যে কখনো থাকছে নয়া প্রাইভেসি পলিসি তো কখনো আবার নানা হয়রানির অভিযোগ। সেক্ষেত্রে এবার, WhatsApp-এর গ্রুপগুলির বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোম্বাই হাইকোর্ট। রিপোর্ট অনুযায়ী, হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ সম্প্রতি জানিয়েছে যে কোনো WhatsApp গ্রুপের অ্যাডমিনকে, সেই গ্রুপের অন্য কোনো সদস্যের আপত্তিকর মেসেজ বা পোস্টের জন্য অপরাধী বা দায়ী গণ্য করা যাবেনা। পাশাপাশি ৩৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া যৌন হয়রানির মামলাও খারিজ করেছে আদালত।

আসলে, প্রায় ৫-৬ বছর আগে ২০১৬ সালে হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) গ্রুপের অ্যাডমিন থাকা কিশোর তারোন নামের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে, গ্রুপের অন্য এক সদস্যের অশালীন আচরণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণে থানায় FIR করা হয়। এমনকি বৈদ্যুতিন মাধ্যমে মহিলাকে আপত্তিকর কনটেন্ট পাঠিয়ে অবমাননা করা হয়েছে, এই মর্মে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইপিসি ৩৫৪-এ (১)(৪), ৫০৯, ১০৭ এবং সেকশন ৬৭ ধারা সহযোগে মামলা দায়ের করা হয়। উল্লেখ্য ওই ঘটনায় গ্রুপের কোনো মহিলা সদস্যের সাথে নোংরামি এবং অভব্য ভাষা ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছিল, এবং কিশোরের ক্ষেত্রে অভিযোগ ছিল তিনি গ্রুপ থেকে সেই দুর্বিত্ত সদস্যটিকে রিমুভ করেননি বা তাকে ক্ষমা চাইতেও বলেননি।

ওই ঘটনার জেরে নিজেকে নিরপরাধ প্রমাণ করতে কিশোরও আদালতে একটি অ্যাপ্লিকেশন ফাইল করেন। সেক্ষেত্রে ঘটনার বেশ কিছুটা সময় কেটে যাওয়ার পর ওই অ্যাডমিনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিচারপতি জেডএ হক এবং এবি বোরকারের নেতৃত্বে একটি ডিভিশন বেঞ্চ যথাযথ রায় দেয় এবং ওই ব্যক্তিকে নির্দোষ ঘোষণা করে।

একই সাথে, এই মামলার শুনানির সময় আদালতের তরফে বলা হয় যে, কোনো হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের কেবল সেই গ্রুপে সদস্য যোগ করা বা রিমুভ করার ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু গ্রুপের কোনো সদস্যের আচরণ নিয়ন্ত্রণ বা পোস্ট করা বিষয়বস্তু সেন্সর করার ক্ষমতা তার নেই। ফলে কোনো গ্রুপ মেম্বারের আচরণের জন্য অ্যাডমিনকে দায়ী করা যায়না। তবে যদি গ্রুপের সদস্য যদি কোনো আইনের বিরুদ্ধে কোনো কনটেন্ট পোস্ট করেন এবং তাতে অ্যাডমিনের মদত আছে প্রমাণিত হয় তাহলে এই জাতীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, আদালতের এই আদেশটি গত মাসে পাস হয়েছে এবং এটির একটি অনুলিপি গত ২২ এপ্রিল প্রকাশ্যে এসেছে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন