ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রের মৃত্যুতে মামলা গেম ডেভেলপারের বিরুদ্ধে! Free Fire, BGMI ব্যান করতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি বিচারপতির

সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের ছাতারপুর জেলায় মোবাইল গেমের পিছনে ৪০ হাজার টাকা নষ্টের পর ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র আত্মঘাতী হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যেই নড়েচড়ে বসেছে। যে মোবাইল গেমকে কেন্দ্র করে তেরো বছর বয়সী কিশোরটিকে এই দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির শিকার হতে হল, মধ্যপ্রদেশ সরকার সেই Free Fire গেমের ডেভেলপারদের বিরুদ্ধে স্বতপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে। এর ফলে ঘটনার নেপথ্যে থাকা গেম ডেভলপারদের উপযুক্ত শাস্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জাতীয় সংবাদ সংস্থা এনডিটিভি (NDTV) সর্বপ্রথম উক্ত কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। প্রসঙ্গত Free Fire ভারত সহ সারা বিশ্বে একটি জনপ্রিয় গেম। এমনিতে এই গেম খেলতে কোনো অর্থ খরচের প্রয়োজন নেই। তবে গেমিংয়ের উপযোগী অভ্যন্তরীণ উপাদান ক্রয়ের জন্য সেখানে অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া সেখানে টুর্নামেন্ট মোডে গেমিংয়ের বন্দোবস্ত আছে। সেক্ষেত্রে বেশ কিছু টুর্নামেন্টে যোগ দিতে হলে টাকা খরচের প্রয়োজন পড়ে। যদিও জীবিতাবস্থায় ঠিক কোন ধরনের লেনদেনের ফলে কিশোর ৪০ হাজার টাকার বিরাট অঙ্ক খুইয়ে বসে, সেটা এখনো জানা যায়নি।

খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই মধ্যপ্রদেশ সরকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে। প্রথমত তারা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী আত্মহত্যায় উসকানি দেয়ার অভিযোগে Free Fire গেম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে। এরপর ব্যাপারটিকে ক্ষতিয়ে দেখার জন্য তারা নিজেদের সাইবার-অপরাধ দপ্তরের শরণাপন্ন হয়। নষ্ট হওয়া পুরো টাকাটাই মৃত কিশোরের মায়ের ইউপিআই (UPI) অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে। ফলে এক্ষেত্রে তদন্তকারীরা তাঁর দ্বারস্থ হন এবং প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

ছাতারপুর জেলায় সংঘটিত ঘটনা সামনে আসতেই অভিভাবকেরা আসক্তি-সৃষ্টিকারী সমস্ত ধরনের ক্ষতিকারক গেমের বিরুদ্ধে আপন আপন ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। অবিলম্বে এই ধরনের গেমগুলির উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত বলে বহু সাধারণ মানুষ মনে করেন। এছাড়া বিচারপতি, নারেশ কুমার লাকা (Naresh Kumar Laka), প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে Battlegrounds Mobile India, Garena Free Fire এর মতো অনলাইন গেমগুলিকে ব্যান করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লিখেছেন বলে জানা গেছে।

গেমিংয়ের নেশায় বাস্তববুদ্ধি হারিয়ে প্রাণ হারানোর ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক। কিন্তু সঠিকভাবে তাকালে দেশের বহু পরিবারে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা গেমিং-আসক্তির ফলে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মধ্যপ্রদেশের ঘটনা উক্ত ক্ষতির এক ধরনের প্রকাশ। কিন্তু সচেতন না হলে ভবিষ্যতে যে এর থেকেও অনেক বেশি খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে সেটা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন