OnePlus 12 vs iQOO 12: দুই ফ্ল্যাগশিপ ফোনের মধ্যে কে এগিয়ে, দেখে নিন দাম ও ফিচারের পার্থক্য

OnePlus 12 vs iQOO 12 : গত ২৩শে জানুয়ারি এদেশের বাজারে আত্মপ্রকাশ করে OnePlus 12। এই স্মার্টফোন যখন প্রথমবারের জন্য চীনে মুক্তি পেয়েছিল, তখনি টেক বিশ্লেষকেরা দাবি করেছিল যে, ডিভাইসটি ভারতে লঞ্চ হলে iQOO 12 ফোনের (লঞ্চ : ১২ই ডিসেম্বর) সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। মূলত প্রায় একসমান ফিচার অফার করায় এমনটা মনে করা হচ্ছিল। যদিও দামের নিরিখে হ্যান্ডসেট দুটির মধ্যে প্রায় ১২,০০০ টাকার ফারাক রয়েছে। তাই OnePlus 12 নাকি iQOO 12 আপনার জন্য সেরা হবে তার উত্তর পেতে এদের দাম ও ফিচারের মধ্যে পার্থক্য দেখে নেওয়া যাক।

OnePlus 12 vs iQOO 12 : দাম

এদেশে নয়া ওয়ানপ্লাস ১২ ফোনের ১২ জিবি র‌্যাম + ২৫৬ জিবি স্টোরেজ যুক্ত বেস ভ্যারিয়েন্টের দাম রাখা হয়েছে ৬৪,৯৯৯ টাকা। আর উচ্চতর ১৬ জিবি র‌্যাম + ৫১২ জিবি স্টোরেজ অপশনের মূল্য ধার্য করা হয়েছে ৬৯,৯৯৯ টাকা। এটি – ফ্লোয় এমারেল্ড এবং সিল্কি ব্ল্যাক কালারে এসেছে।

ভারতের বাজারে আইকো ১২ স্মার্টফোন দুটি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টে লঞ্চ হয়েছে। যার মধ্যে ১৬ জিবি র‍্যাম + ২৫৬ জিবি স্টোরেজ যুক্ত বেস ভ্যারিয়েন্টের দাম রাখা হয়েছে ৫২,৯৯৯ টাকা। আর উচ্চতর ১৬ জিবি র‍্যাম + ৫১২ জিবি স্টোরেজ অপশন ৫৯,৯৯৯ টাকায় কেনা যাবে। এটি – লেজেন্ড (হোয়াইট) এবং আলফা (ব্ল্যাক) কালারে পাওয়া যাবে।

ওয়ানপ্লাস ১২ বনাম আইকো ১২ : ডিসপ্লে, সেন্সর

OnePlus 12 ফোনে রয়েছে কর্নিং গরিলা গ্লাস ভিক্টাস ২ প্রোটেকশন সহ ৬.৮২-ইঞ্চির কোয়াড এইচডি প্লাস প্রোএক্সডিআর এলটিপিও অ্যামোলেড ডিসপ্লে প্যানেল। এই টাচস্ক্রিন – ১ থেকে ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট, ৪৫০০ নিট পিক ব্রাইটনেস, ১০০% ডিসিআই-পি৩, ১০-বিট কালার ডেপথ, ডলবি ভিশন এবং এইচডিআর১০+ প্রযুক্তি সাপোর্ট করে। সংস্থা দ্বারা ডেভেলপ করা পি১ ডিসপ্লে চিপ থাকছে এই হ্যান্ডসেটে, যা পাওয়ার খরচ কমানোর পাশাপাশি ছবির গুণমানও উন্নত করবে। নিরাপত্তার জন্য এতে ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার দেওয়া হয়েছে।

ফ্লাট ও গ্লসি অ্যালুমিনিয়াম অ্যালয় ফ্রেমের সাথে আসা iQOO 12 স্মার্টফোনে ৬.৭৮-ইঞ্চির ১.৫কে (২৮০০x১২৬০ পিক্সেল) ১০-বিট এলটিপিও অ্যামোলেড ডিসপ্লে আছে। এই ডিসপ্লের ডিজাইন পাঞ্চ-হোল (কেন্দ্রীভূত) স্টাইলের এবং এটি – ৪৫২ পিপিআই পিক্সেল ডেনসিটি, ১৪৪ হার্টজ রিফ্রেশ রেট, সর্বোচ্চ ২১৬০ হার্টজ PWM ডিমিং এবং ৩০০০ নিট পিক ব্রাইটনেস সাপোর্ট করে। সিকিউরিটি ফিচার হিসাবে এতে অপটিক্যাল ইন-স্ক্রিন ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর মিলবে।

OnePlus 12 vs iQOO 12 : প্রসেসর, অপারেটিং সিস্টেম, র‍্যাম, স্টোরেজ

অভ্যন্তরীণ স্পেসিফিকেশনের কথা বললে, ওয়ানপ্লাস ১২ ফোনে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ৩ প্রসেসর এবং অ্যাড্রনো ৭৫০ জিপিইউ ব্যবহার করা হয়েছে। আবার গেমিং পারফরম্যান্স উন্নত করতে ডিভাইসটি এক্স৭ ভিজ্যুয়াল প্রসেসর সহ এসেছে। তদুপরি স্টোরেজ হিসাবে ১৬ জিবি LPDDR5X র‍্যাম এবং ৫১২ জিবি পর্যন্ত UFS 4.0 রম পাওয়া যাবে। ফোনটি লেটেস্ট অ্যান্ড্রয়েড ১৪ ভিত্তিক অক্সিজেন ওএস ১৪ কাস্টম স্কিনে রান করে। এর সাথে চার বছরের অ্যান্ড্রয়েড আপডেট এবং পাঁচ বছরের সিকিউরিটি আপডেট দেওয়া হবে।

মাল্টিটাস্কিং ও উন্নত পারফরম্যান্স সরবরাহের জন্য আইকো ১২ স্মার্টফোনে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ৩ প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। এটি ১৬ জিবি LPDDR5x র‍্যাম এবং ৫১২ জিবি পর্যন্ত UFS 4.0 স্টোরেজ সহ পাওয়া যাবে। অপারেটিং সিস্টেম হিসাবে এই ফোনে অ্যান্ড্রয়েড ১৪ ভিত্তিক ফানটাচ ওএস ১৪ কাস্টম স্কিন প্রি-লোডেড থাকছে।

OnePlus 12 vs iQOO 12 : ক্যামেরা সেটআপ

ফটো ও ভিডিওগ্রাফির জন্য OnePlus 12 ফোনে ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ বর্তমান। এই ক্যামেরাগুলি হল – ওআইএস সমর্থিত ১/১.৪ ইঞ্চি সাইজের ৫০ মেগাপিক্সেল Sony LYT-808 প্রাইমারি সেন্সর (অ্যাপারচার : এফ/১.৬) + ৩এক্স অপটিক্যাল জুম ও ১২০এক্স পর্যন্ত ডিজিটাল জুম সহ ৬৪ মেগাপিক্সেল OV64B পেরিস্কোপ টেলিফটো লেন্স + ১/২ ইঞ্চি সাইজের ৪৮ মেগাপিক্সেল Sony IMX581 আল্ট্রা-ওয়াইড শুটার (অ্যাপারচার : এফ/২.২)। এদিকে ডিভাইসের সামনে ৩২ মেগাপিক্সেলের Sony IMX615 ফ্রন্ট-ফেসিং ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে, যা এফ/২.৪ অ্যাপারচার সাপোর্ট করে।

iQOO 12 ফোনের রিয়ার প্যানেলে থাকা আয়তক্ষেত্রাকার ক্যামেরা আইল্যান্ডের মধ্যে তিনটি ক্যামেরা লক্ষৃণীয়। এই ক্যামেরাগুলি হল – OIS এনাবল ৫০ মেগাপিক্সেল OmniVision OV50H প্রাইমারি সেন্সর + অটোফোকাস সহ ৫০ মেগাপিক্সেল Samsung JN1 আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স + OIS ও ৩এক্স জুম সমর্থিত ৬৪ মেগাপিক্সেল OV64B পেরিস্কোপ সেন্সর। এদিকে ডিভাইসের সামনে ১৬ মেগাপিক্সেলের Samsung S5K3P9 সেলফি স্ন্যাপার বিদ্যমান।

OnePlus 12 vs iQOO 12 : ব্যাটারি, কানেক্টিভিটি বিকল্প

কানেক্টিভিটির জন্য ওয়ানপ্লাসের এই নয়া ফ্ল্যাগশিপে – ডুয়েল সিম স্লট, ৫জি, ওয়াই-ফাই ৭ ৮০২.১১ বি/এএক্স/এসি, ব্লুটুথ ৫.৪, এনএফসি, জিপিএস, গ্লোনাস, গ্যালিলিও, বেইডো এবং ইউএসবি ২.০ পোর্ট অন্তর্ভুক্ত থাকছে। আবার পাওয়ার ব্যাকআপের ক্ষেত্রে ৫,৪০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি রয়েছে, যা ৮০ ওয়াট সুপারভুক ফাস্ট চার্জিং এবং ৫০ ওয়াট এয়ারভোক ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তি সাপোর্ট করে।

কানেক্টিভিটি বিকল্প হিসাবে আইকো ১২ ৫জি স্মার্টফোনে সামিল রয়েছে – ডুয়াল সিম স্লট, ৫জি, ওয়াই-ফাই ৭, ব্লুটুথ ৫.৪, জিএনএসএস, এনএফসি, এবং ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট। নবাগতটি ৫,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটি ব্যাটারির সাথে এসেছে, যা ১২০ ওয়াট ওয়্যারড চার্জিং সমর্থন করে।

OnePlus 12 vs iQOO 12 : পরিমাপ ও রেটিং

IP65 রেটিং প্রাপ্ত ওয়ানপ্লাস ১২ ৫জি স্মার্টফোনের পরিমাপ ১৬৪.৩x৭৫.৮x৯.১ মিমি এবং ওজন ২২০ গ্রাম।

আইকো ১২ ৫জি স্মার্টফোন IP64 রেটিং প্রাপ্ত। এর পরিমাপ ১৬৩.২x৭৫.৯x৮.১ মিমি এবং ওজন ১৯৮.৫ / ২০৩.৭ গ্রাম।