সংস্থার ১২ বছর পূর্তিতে ডেটা সুরক্ষা মজবুত রাখার দৃঢ় অঙ্গীকার WhatsApp-এর

আমাদের সাথে পাল্লা দিয়েই বয়স বাড়ছে হোয়াটসঅ্যাপের (WhatsApp)। এই ফেব্রুয়ারি মাসেই লক্ষ লক্ষ মানুষের দৈনন্দিন ছোট ছোট আবেগ, অনুভূতির হিসেব রেখে চলা ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশনটি তেরো বছরে পা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার একটি টুইট পোস্টের মাধ্যমে সংস্থাটি তাদের আবির্ভাবের ১২ বছর পূর্তির কথা ঘোষণা করেছে। নানা উত্থানপতনের মধ্যে দিয়ে এতগুলো বছরে হোয়াটসঅ্যাপে পরিবর্তন যেমন এসেছে, তেমনই তা আমাদের জীবনের নিত্যপ্রয়োজনীয় অঙ্গ হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতি এমনই যে হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়া আমাদের এখন এক দিন কাটাতেও কষ্ট হয়! তাই তো হোয়াটসঅ্যাপের বিতর্কিত নয়া প্রাইভেসি পলিসি আমাদের নিরাশ করে। অন্য মেসেজিং অ্যাপ তো আছেই, কিন্তু মন যে হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়তে চায়না! সেইজন্যই ফেসবুক মালিকানাধীন এই অ্যাপটিও যেন ১২ বছরের ইতিহাস শেয়ার করতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে।

তেরো বছর বয়সে দাঁড়িয়ে WhatsApp কর্তৃপক্ষের টুইট অনেক কথাই মনে করিয়ে দেয়। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রাক্তন ইয়াহু (Yahoo) কর্মী ব্রায়ান অ্যাক্টন (Brian Acton) ও জাঁ কোমের (Jan Koum) হাত ধরে যে অ্যাপটির যাত্রা শুরু, তার সাথে আজকের জনপ্রিয়তম অ্যাপ্লিকেশনের বিস্তর ফারাক রয়েছে। ব্যবহারকারীরা যাতে নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন স্ট্যাটাস বিনিময় করতে পারেন, তার উপযোগী হিসেবেই প্রাথমিকভাবে হোয়াটসঅ্যাপকে প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু এরপর থেকে মেসেজিং অ্যাপ হিসেবে এর চাহিদা বাড়তে থাকে এবং অচিরেই এসএমএসের মাধ্যমে যোগাযোগের বিকল্প হিসেবে এটি উঠে আসে।

২০১৪ সালে ফেসবুক (Facebook) হোয়াটসঅ্যাপের মালিকানা ক্রয় করে। এরপর কেবল লাগাতার উন্নতি। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হোয়াটসঅ্যাপে ভয়েস কলিংয়ের ফিচার যুক্ত হয়। ভিডিও কলিং পরিষেবা যুক্ত হয় নভেম্বর, ২০১৬ সালে। এরপর আগস্ট, ২০১৮ -তে আসে গ্রুপ ভয়েস ও ভিডিও কলিংয়ের সুবিধা। এভাবে বারবার নতুন ফিচার যোগ করে Whatsapp ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশনের জগতে অদ্বিতীয় হয়ে উঠেছে।

টুইটের মাধ্যমে সংস্থাটি জানিয়েছে যে, বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় ২ বিলিয়নেরও বেশী মানুষ সক্রিয়ভাবে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। এভাবে অ্যাপ্লিকেশনটির মাধ্যমে ইউজারেরা নিজেদের মধ্যে মাসিক ১০০ বিলিয়ন মেসেজ আদান-প্রদান করে থাকেন যা একটি অভূতপূর্ব পরিসংখ্যান। শুধু এটুকুই নয়, এই মুহূর্তে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে আমরা নির্দিষ্ট পেমেন্ট সম্পূর্ণ করতে পারি, বন্ধু-পরিজনকে পাঠাতে পারি মনপসন্দ GIF বা স্টিকার!

তবে সবকিছু ঠিকঠাক চললেও হোয়াটসঅ্যাপের সাম্প্রতিক প্রাইভেসি পলিসি ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এর মাধ্যমে হোয়াটসঅ্যাপ লাগামহীনভাবে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ এবং অন্যান্য সোর্সের সঙ্গে তা বিনিময় করতে পারে বলে অভিযোগ। এক্ষেত্রে দরকার পড়বেনা ইউজারের অনুমতির! ৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ থেকে এই নতুন প্রাইভেসি শর্ত লাগু হওয়ার কথা থাকলেও, বিতর্কের ফলে তা মে মাসের ১৫ তারিখে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও নতুন প্রাইভেসি শর্তের ফলে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত হবেনা বলে হোয়াটসঅ্যাপ তাদের টুইটে দাবী করেছে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন