Google Doodle: বিজ্ঞানী কমল রণদীভের ১০৪-তম জন্মদিনে শ্রদ্ধা গুগলের

Dr. Kamal Ranadive Birth Anniversary Google Doodle: আজ ৮ই নভেম্বর, প্রখ্যাত ভারতীয় কোষবিজ্ঞানী ডঃ কমল রণদীভের ১০৪তম জন্মদিবস। ক্যানসার গবেষণায় তাঁর অসামান্য অবদান ও ভারতবর্ষে পিছিয়ে পড়া মানুষদের বিজ্ঞান ও শিক্ষার মাধ্যমে জীবনে সদর্থক সুযোগ করে দেবার মহান ব্রতে তাঁর জীবন নিয়োজিত ছিল। এহেন একটি মানুষের অবদানকে আজ গুগল ডুডলের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানাল গুগল। ডুডলটিতে ডঃ রণদীভে কে মাইক্রোস্কোপ হাতে দেখা গেছে। এই ছবিটি এঁকেছেন শিল্পী ইব্রাহিম রেইন্তাকাথ। আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা কমল রণদীভের জীবনবৃত্তান্ত জানাবো।

ড. কমল রণদীভে ( জন্ম – কমল সমর্থ) ১৯১৭ সালের ৮ই নভেম্বর পুণেতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন দীনেশ দত্তাত্রেয় সমর্থ এবং মাতা শান্তাবাই দিনকর সমর্থ। ড. রণদীভের পিতা পুনের ফার্গুসন কলেজের জীববিদ্যার অধ্যাপক ছিলেন। তৎকালীন রক্ষণশীল সমাজের বিধিনিষেধ সত্ত্বেও বাল্যকাল থেকেই অত্যন্ত মেধাবী কমল শিক্ষাক্ষেত্রে পিতার পূর্ণ সমর্থন পেয়েছিলেন, যদিও তিনি চাইতেন তাঁর কন্যাটি একজন ডাক্তার হোক।

১৯৩৪ সালে তিনি ফার্গুসন কলেজ থেকে স্নাতক হন এবং ১৯৩৯ সালে জে. টি. রণদীভে নামক একজন অঙ্কবিদের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন। ১৯৪৯ সালে ভারতীয় ক্যানসার গবেষণা সংস্থায় কাজ করাকালীন তৎকালীন বম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোষবিদ্যায় ডক্টরেট হন। এরপর আমেরিকার জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফেলোশিপ অর্জন করেন।

ভারতবর্ষে ফিরে ড. কমল ইন্ডিয়ান ক্যানসার রিসার্চ সেন্টারে (ICRC) যোগদান করেন। মূলত তাঁর উদ্যোগেই ICRC তে ভারতবর্ষের প্রথম টিস্যু কালচার ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠিত হয়৷ পরবর্তীকালে তিনি এই সংস্থার ডিরেক্টর পদেও আসীন হয়েছিলেন।

ক্যানসার সংক্রান্ত গবেষণায় ড. কমল রণদীভের অতি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। হেরেডিটি এবং স্তন ক্যানসারের মধ্যে যে যোগসূত্র রয়েছে – এ সংক্রান্ত গবেষণায় তিনি একজন পথিকৃৎ। এছাড়াও ভাইরাস সঙ্গে ক্যানসারের যোগাযোগ সংক্রান্ত তথ্যও তিনি আবিষ্কার করেন। কুষ্ঠ সংক্রান্ত গবেষণাতেও তাঁর অবদান আছে৷ কুষ্ঠের টীকা আবিষ্কারে তাঁর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল।

পুরুষ শাসিত কর্মজগতে একজন নারী বৈজ্ঞানিক হিসেবে নানান অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাঁকে। পরবর্তীকালে বিজ্ঞানশিক্ষায় আগ্রহী মেয়েদের সুবিধার্থে তিনি এবং তাঁর এগারো জন সহকর্মী গড়ে তোলেন ইন্ডিয়ান ওম্যান সায়েন্টিস্ট’স অ্যাসোসিয়েশন বা IWSA। গুগল জানিয়েছে যে ড. কমল রণদীভে প্রবাসী স্কলারদের উৎসাহিত করতেন, যাতে তারা ভারতবর্ষে ফিরে তাঁদের অর্জিত জ্ঞান দ্বারা নিজ নিজ ক্ষেত্রকে সমৃদ্ধ করতে পারেন।

অবসর পরবর্তী জীবনে তিনি মহারাষ্ট্রের গ্রামীণ এলাকায় মহিলাদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষা ইত্যাদি সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতনতা প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করেন। এই মহান ভারতীয় বিজ্ঞানী ২০০১ সালের ১১ই এপ্রিল প্রয়াত হন।