Russia-Ukraine Crisis: ইউক্রেনের পক্ষ নেওয়ায় আমেরিকাকে একহাত নিল রাশিয়া, নিষিদ্ধ Facebook

একথা আমরা সকলেই জানি যে, ইতিমধ্যে বিশ্বে এক ভয়ঙ্কর যুদ্ধের দামামা বেজে গিয়েছে। ইউক্রেনের আকাশে ম ম করছে বারুদের গন্ধ, কারণ সেদেশের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান শুরু করেছে রাশিয়া। স্থলে, জলে এবং আকাশে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে সেনা অভিযান চালাচ্ছে পুতিন সরকার, যার ফলে বিশ্বের বিভিন্ন আর্থসামাজিক এবং ব্যবসায়িক পরিষেবার ওপর চরম কুপ্রভাব পড়ছে। ইতিমধ্যেই কয়েকশো মানুষ নিহত হয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’-র পর আবারও একবার ফের দুভাগে বিভক্ত গোটা বিশ্ব। এই পরিস্থিতিকে অনেকেই ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’-র আগের মুহূর্ত বলে ব্যাখ্যা করছেন।

এমত পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা। তাই ইউক্রেনের স্বপক্ষে থেকে আমেরিকা রাশিয়ার ওপর বেশ কিছু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কিন্তু ছেড়ে কথা বলার পাত্র নয় রাশিয়াও, তাই পাল্টা আক্রমণে তারাও মাঠে নেমেছে। আর এর ফলস্বরূপ রাশিয়া মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা শুরু করেছে। এবং এই নিষেধাজ্ঞার প্রথম কোপ গিয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী অন্যতম জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক (Facebook)-এর উপর। হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন! বর্তমানে রাশিয়া গোটা দেশে ফেসবুকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।

Facebook সম্পর্কে রাশিয়ার অভিযোগ

রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভুয়ো সামরিক অভিযানের বিষয়ে ইউক্রেনের দাবিকে অতিরঞ্জিত করার জন্য ফেসবুকের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, আর এই কারণে দেশটি এই ধরনের সমস্ত পোস্ট সেন্সর করার আদেশ দিয়েছে। সেইসাথে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় যোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা দাবি করেছে যে, ফেসবুক তাদের প্ল্যাটফর্মে রাশিয়ার চারটি গণমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি উপেক্ষা করেছে – আরআইএ নিউজ এজেন্সি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জাভেজদা টিভি এবং gazeta.ru ও lenta.ru ওয়েবসাইটদ্বয়।

রাশিয়ার দাবি মানতে নারাজ Facebook 

মেটা গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রধান নিক ক্লেগ (Nick Clegg) জানিয়েছেন, রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ ফেসবুককে ফ্যাক্ট-চেকিং এবং কনটেন্ট লেবেলিংয়ের কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু ফেসবুক তা করতে অস্বীকার করেছে। এই কারণে রাশিয়ায় পুরোপুরিভাবে ফেসবুক সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য যে, দীর্ঘদিন ধরেই ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে মেটার বিরুদ্ধে। এর জন্য সংস্থাটি আউটসাইট ফ্যাক্ট চেকারের সাথে অংশীদারিত্ব করেছে। এর মধ্যে রয়েছে রয়টার্সের মতো সংস্থাও, যারা ভুয়ো খবর সম্পর্কে তথ্য দেয়।

YouTube ও Twitter-কে হুঁশিয়ারি

মার্কিন সিনেটর মার্ক ওয়ার্নার বিভিন্ন দেশের ফেসবুক, ইউটিউব-এর মতো সংস্থাগুলির সিইওদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বলেছেন যে, রাশিয়া ও রাশিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলি যাতে কোনোভাবে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির অপব্যবহার না করতে পারে, তা নিশ্চিত করা কোম্পানিগুলির দায়িত্ব। Google-এর তরফে জানানো হয়েছে যে, গত কয়েকদিনে তারা তাদের নিয়মাবলি লঙ্ঘনের জন্য কয়েকশো ইউটিউব চ্যানেল এবং হাজার হাজার ভিডিও সরিয়ে নিয়েছে। অন্যদিকে, টুইটার থেকেও একাধিক ভিডিও রিমুভ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী মনে করা যেতেই পারে যে, শুধু ইউক্রেনের বিরুদ্ধেই নয় খোদ আমেরিকার বিরুদ্ধেও সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হয়েছে রাশিয়া। তবে এর পরিণতি ঠিক কী হবে, তার উত্তর একমাত্র সময়ের কাছেই রয়েছে।