লক্ষাধিক টাকা প্রতারণার শিকার মহিলা! ভুলেও হোয়াটসঅ্যাপে আসা এই লিঙ্কে ক্লিক করবেন না

বিগত কয়েক বছরে ডিজিটাল জালিয়াতির ঘটনা অত্যন্ত বেড়েছে। সরকার, সাইবার সুরক্ষা দফতর বা ব্যাংকের সাবধানবাণী জানার পরেও বারংবার অসাবধানের বশে আমরা আর্থিক কেলেঙ্কারির শিকার হচ্ছি! কিন্তু সম্প্রতি ফের এমনই একটি সাইবার জালিয়াতির কথা সামনে এসেছে, যেখানে স্রেফ কয়েকটি ক্লিকেই ৩ লাখ টাকারও বেশি খুইয়েছেন ২৭ বছর বয়সী এক মহিলা। একটি শীর্ষস্থানীয় অনলাইন শপিং পোর্টাল থেকে পুরষ্কার পাবেন – হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে এই ফাঁদে পা দিয়েই মহিলা প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। আসুন গোটা বিষয়টি জেনে নিই।

অনলাইন জালিয়াতিতে কার্যত সর্বস্বান্ত মহিলা

রিপোর্ট অনুযায়ী, কান্দিভালি নিবাসী এবং পেশায় ইন্টেরিয়র ডিজাইনার ওই মহিলা গত সপ্তাহে চরকোপ থানায় একটি প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। মহিলা জানিয়েছেন, তিনি হোয়াটসঅ্যাপে একটি লিঙ্ক পেয়েছিলেন, যেখানে তাকে কিছু স্টেপ ফলো করতে বলা হয়। ওই স্টেপগুলি সম্পন্ন করার পর, একটি শীর্ষস্থানীয় অনলাইন শপিং পোর্টালের নামে পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এতে আবেগের বশে মহিলা সেই লিঙ্কে ক্লিক করে বসেন। লিঙ্কে ক্লিক করার পর, তাঁকে একটি ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড তৈরি করতে বলা হয়। সেখানে তিনি অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন এবং পুরস্কার হিসেবে ৬৪ টাকা জেতেন। এরপর তাকে রিচার্জ করার একটি কাজ দেওয়া হয় যা সম্পন্ন করার পর তিনি আরও পুরষ্কার পান।

কিন্তু এর পরেই আসল গোল বাধে! ওই মহিলাকে আরো পুরস্কারের জন্য টাকা জমা করতে বলা হয়। আর কোনো কিছু না ভেবে (কার্যত লালায়িত হয়ে) মহিলা প্রায় ৩.১১ লাখ টাকা জমা দিয়ে বসেন। কিন্তু এর বিনিময়ে তিনি কিছুই পাননি। বারবার অযাচিত লিঙ্কে ক্লিক করা বা ব্যাঙ্কিং বিশদ যেখানে সেখানে শেয়ার না করার অনুরোধ সত্ত্বেও, যেভাবে ওই মহিলা বোকামো করে নিজের টাকা খুইয়েছেন – তা শুনলে অবাক হবেন অনেকেই। এদিকে গোটা ঘটনায় পুলিশ আইপিসি ৪২০ ধারা (প্রতারণা) ও তথ্য প্রযুক্তি আইনের প্রাসঙ্গিক বিধানের অধীনে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করেছে, একই সাথে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানানো হয়েছে।

কিভাবে অনলাইনে জালিয়াতি এড়াবেন?

১. সাইবার প্রতারণার শিকার হতে না চাইলে, কখনোই কাউকে আপনার পাসওয়ার্ড, পিন নম্বর বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর দেবেন না। মনে রাখবেন, বৈধ কোম্পানি এবং ব্যাংক কখনই আপনাকে ইমেইল বা ফোনে এই ধরণের বিবরণ জিজ্ঞাসা করে না।

২. আপনি যদি বাইরে থাকেন এবং অনলাইনে কেনাকাটা করে থাকেন, তাহলে পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করবেন না। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র আপনার নিজের মোবাইল ডেটাই ব্যবহার করুন।

৩. পেমেন্টের সময় ডেবিট কার্ডের পরিবর্তে ক্রেডিট কার্ড এবং সুরক্ষিত পেমেন্ট পরিষেবা ব্যবহার করুন।

৪. অনলাইনে টাকা ট্রান্সফারের জন্য বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্মগুলি ব্যবহার করুন।

৫. কোনো সন্দেহজনক লিঙ্কে ক্লিক করবেন না এবং সেখানে টাকা বিনিয়োগ করবেন না।

৬. শপিং-ব্রাউজিং ইত্যাদির জন্য সবসময় বিশ্বস্ত, পরিচিত বা নিরাপদ সাইট ব্যবহার করুন।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন