Cryptocurrency: স্কুলজীবন থেকেই ডিজিটাল মুদ্রা ও ব্লকচেন সিস্টেমে সড়গড় হওয়ার পরামর্শ নবনির্বাচিত মেয়রের

সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর নিউ ইয়র্ক সিটির সদ্য নির্বাচিত ১১০তম মেয়র এরিক অ্যাডামস্ (Eric Adams) এর ক্রিপ্টো -ঝোঁক চোখ টেনেছে গোটা বিশ্বের। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ক্রিপ্টো বাজারের উন্নতি সম্পর্কে যথেষ্ট আশাবাদী অ্যাডামস্, তাঁর প্রথম তিন মাসের বেতন বিটকয়েন চেকের মাধ্যমে গ্রহণ করবেন বলে টুইট করে জানিয়েছেন এক সামাজিক গণমাধ্যমে। এমনকী, শহরের স্কুল গুলির পাঠ্যসূচিতেও ক্রিপ্টো-শিক্ষা অন্তর্ভুক্তির পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি। পাশাপাশি, নিউ ইয়র্ক শহরটিকে অদূর ভবিষ্যতে ক্রিপ্টোকারেন্সি শিল্প কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে ডেমোক্রেটিক দলের এই প্রতিনিধির বয়ানে।

ক্রিপ্টো সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে অবগত করতেও বেশ তৎপর মেয়র। সম্প্রতি CNN- এর এক সাক্ষাৎকারে ধরা পড়েছে সেই অভিপ্রায়ই। অ্যাডামস্ জানান, নিউ ইয়র্কের মতো শিল্প ও প্রযুক্তিনির্ভর শহর যেখানে ড্রোন ডেভেলপমেন্ট, সাইবার নিরাপত্তার মতো জটিল বিষয়ে মানুষ পিছিয়ে নেই, সেখানে ডিজিটাল মুদ্রা, ব্লকচেন প্রযুক্তির ব্যাপারে নূূনতম ধারণা নেই আট থেকে আশির অনেকেরই। স্থানীয় স্কুলগুলির কাছে তিনি আবেদন জানিয়েছেন ব্লকচেন প্রযুক্তি, ডিজিটাল অ্যাসেট কে মাধ্যম করে ছাত্রছাত্রীদের কাছে চিন্তাশক্তির এক নতুন দিগন্ত তুলে ধরতে। ভার্চুয়াল মুদ্রা কে তিনি গোটা বিশ্বে দ্রব্য ও পরিষেবা কর মেটানোর এক অভিনব বিকল্প মাধ্যম হিসেবেও ব্যাখ্যা করেছেন।

বিটকয়েন প্রযুক্তি কে নিউ ইয়র্ক শহরে প্রচলিত অর্থনীতির এক বৃহত্তর অংশ হিসেবে গড়ে তোলা যে যথেষ্ট কার্যসাপেক্ষ তা স্পষ্টই স্বীকার করে নেন তিনি। তবে সম্মিলিত পরিশ্রম ও উপযুক্ত নজরদারির মাধ্যমে তিনি তা অবশ্যই সম্ভবপর করে তুলবেন, এমনও বার্তা মিলেছে নব নির্বাচিত মেয়রের কাছ থেকে।

তবে অ্যাডামস্ এর এই ক্রিপ্টো- প্রবণতার নেপথ্যে প্রযুক্তি প্রেমের চেয়ে মায়ামির মেয়র ফ্রান্সিস সুয়ারেজের প্রতি প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবকেই বড় করে দেখছে নিউ ইয়র্কের এক জনপ্রিয় প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ। এ বিষয়ে উল্লেখ্য নিউ ইয়র্ক শহরে মিয়ামি কয়েনের অনুরূপ এক ক্রিপ্টো মুদ্রা চালুর বিষয়েও পরিকল্পনা করছেন অ্যাডামস্।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরেই ব্লকচেন ডটকম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সদর দপ্তর নিউ ইয়র্ক থেকে সরিয়ে মায়ামি তে স্থানান্তরিত করেছে, যা মায়ামি শহর টিকে ক্রিপ্টো-সংস্কৃতির এক জনপ্রিয় কেন্দ্রে পরিণত করেছে।

ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে অ্যাডামস্ এর এই ইতিবাচক অবস্থান কে কটাক্ষ করে আমেরিকান অর্থনীতিবিদ ও হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাসন ফারমান মন্তব্য করেন, বিনিয়োগ ক্ষেত্রে এটি একটি ভুল পদক্ষেপ এবং নিউ ইয়র্কের মানুষের জন্যও ভুল বার্তাবহনকারী।

পাল্টা জবাবে দৃঢ় ও আত্মবিশ্বাসের সুর মেয়রের গলাতেও। বলেছেন এই সিদ্ধান্ত একান্তই ব্যক্তিগত। অতীতে, স্টক মার্কেটে হাজার হাজার ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া অ্যাডাম বিশ্বাস করেন অন্যান্য বিনিয়োগ মাধ্যম গুলোর মতোই স্বাভাবিক ভাবেই উত্থান পতন রয়েছে ক্রিপ্টো বাজারেও। তবে, বিটকয়েন কে অস্থিতিশীলতার দিক দিয়ে বাজার চলতি অন্যান্য বিনিয়োগ মাধ্যম অপেক্ষা এগিয়ে রাখতে একেবারেই নারাজ তিনি।

নিউ ইয়র্কের নতুন মেয়র ক্রিপ্টো নিয়ে তাঁর পরিকল্পনা আদৌ বাস্তবয়িত করতে পারবেন কিনা তা সময়ই বলবে। তবে ভার্চুয়াল মুদ্রা সম্পর্কে এধরনের ভাবনা বর্তমান রাজনীতিবিদদের মুদ্রা ব্যবস্থার ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগকেই নির্দেশ করছে, যা নি:সন্দেহে অত্যন্ত ইতিবাচক।