নতুন বস আসতেই ছাঁটাই, প্রাক্তন দুই Twitter কর্মীই ঘুম ওড়াচ্ছে Elon Musk এর

মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারের (Twitter) দায়ভার ইলন মাস্কের (Elon Musk) হাতে স্থানান্তর হওয়ার পর থেকেই কোম্পানির বিদ্যমান কর্মী-মহলে অসন্তোষের ছায়া দেখা গিয়েছিল। যার অন্যতম কারণ হল, আমেরিকা ভিত্তিক এই বিলিনিয়ার ব্যবসায়ী টুইটারের বহু উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের ইতিমধ্যেই বরখাস্ত করেছেন। আবার সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মে একাধিক পরিবর্তন আনার কারণে বহু কর্মচারী স্ব-ইচ্ছাতেও ইস্তফা দিচ্ছেন। এমত অবস্থায় দাঁড়িয়ে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, টুইটারের নতুন কর্মকর্তার ব্যবহার ও কাজে যথেষ্ট অসন্তুষ্ট কর্মীরা। আর এই অসন্তোষকে কারণ করে সম্প্রতি টুইটারের দু’জন প্রাক্তন কর্মচারী একটি বিকল্প অ্যাপ তৈরি করছেন বলে জানিয়েছেন। এই নয়া কমিউনিকেশন অ্যাপ্লিকেশনের নাম দেওয়া হয়েছে স্পিল (Spill)।

Twitter বিকল্প অ্যাপ Spill তৈরীতে ব্যস্ত ইলন মাস্ক দ্বারা বহিস্কৃত দুই কর্মচারী

রিপোর্ট অনুসারে, আলফোনজো ফোনজ টেরেল (Alphonzo Phonz Terrell) এবং ডিভারিস ব্রাউন (DeVaris Brown) নামের দু’জন কর্মচারীকে গত নভেম্বর মাসে টুইটার থেকে বরখাস্ত করেছিলেন ইলন মাস্ক। যার এক মাস পরেই এই দুই প্রাক্তন কর্মচারী টুইটারের একটি বিকল্প অ্যাপ স্পিল (Spill) তৈরী করছেন বলে ঘোষণা করেন। প্রতিষ্ঠাতাদের দাবি অনুসারে, এই অ্যাপ টুইটারের অন্যতম বড় প্রতিদ্বন্দ্বি হবে। কেননা এই নতুন প্ল্যাটফর্মটি তাদের ইউজারদের রিয়েল টাইম কনভার্সেশন বা কথোপকথনে সুবিধা অফার করবে। সর্বোপরি, সংস্কৃতিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এই অ্যাপে। স্পিল প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতারা জানিয়েছেন, আগামী জানুয়ারি মাসে এই অ্যাপটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে লঞ্চ করা হবে।

প্রসঙ্গত, বরখাস্ত হওয়ার আগে টেরেল টুইটারের গ্লোবাল সম্পাদকীয় প্রধান হিসাবে কাজ করতেন। অন্যদিকে ব্রাউন টুইটারে প্রোডাক্ট ম্যানেজারের ভূমিকা পালন করছিলেন। ফলে উভয়ের কাজের বিষয় ও দক্ষতা ছিল মেশিন লার্নিং-এ। এক্ষেত্রে জানিয়ে রাখি, মেশিন লার্নিং (ML) হল আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্সি (AI) -এর একটি সাবফিল্ড, যা মূলত একটি মেশিনের দ্বারা বুদ্ধিমান মানুষের আচরণ অনুকরণ করার ক্ষমতাকে সংজ্ঞায়িত করে।

টেকক্রাচ (TechCruch) -কে দেওয়া একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে স্পিলের প্রতিষ্ঠাতারা অভিযোগ করেছিলেন যে, ইলন মাস্কের মালিকানায় টুইটারে বর্ণবৈষম্যের পরিবেশ দেখা দিয়েছিল। যার দরুন ‘ব্ল্যাক’ কর্মচারীদের কাজ করার একটা সীমানা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। আর এই কারণেই তারা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চেয়েছিলেন যেখানে ‘কালচার’ বা সাংস্কৃতিককে অধিক প্রাধান্য দেওয়া হবে এবং একই সাথে শ্যাম-বর্ণের ইউজারদের প্রভাব বেশি থাকবে।

মনিটাইজেশনের সুবিধা পাওয়া যাবে Spill অ্যাপে

প্রতিষ্ঠাতা আলফোনজো ফোনজ টেরেল এবং ডিভারিস ব্রাউনের দাবি স্পিল অ্যাপটি সবার জন্য তৈরী করা হবে। এখানে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এমন পোস্টের জন্য ইউজারদের অর্থপ্রদান করতে ব্লকচেইন প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। আবার এতে ‘টি পার্টি’ (tea parties) নামক একটু ফিচারও পাওয়া যাবে। যার মাধ্যমে ইউজাররা অনলাইনে ‘রিয়েল লাইফ’ -এর ন্যায় একত্রিত হয়ে একে অপরের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হবেন।

প্রসঙ্গত টেরেল জানিয়েছেন যে ‘স্পিল’ ওয়েব৩ (web3) -এর মতো নয়। এতে, ব্লকচেইন প্রযুক্তিকে ক্রিয়েটারদের ক্রেডিট করতে ব্যবহার করা হবে। তাই যদি কোনো স্পিল ভাইরাল হয়ে যায় তবে নির্মাণকারীরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অর্থ পাবে এবং তাদের অ্যাকাউন্ট মনিটাইজও করা হতে পারে।