Solar storm: বড়সড় সৌর ঝড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাওয়ার গ্রিড ধ্বংসের আশংকা করছে বিজ্ঞানিরা

সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় সূর্যের উপরিভাগে তৈরি হওয়া একটি বড়সড় সৌরঝড় (Solar storm) কে সোলার সুপারস্টর্ম (Solar superstorm) আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এই বিধ্বংসী ঝড়টি চীনের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ক্ষতিসাধন করতে পারে। উল্লেখ্য, সূর্য থেকে নির্গত বৈদ্যুতিক তরঙ্গ মহাকাশে একটি চুম্বকীয় প্রবাহ তৈরি করে। এই মহাজাগতিক ঘটনাকেই সৌরঝড় বলা হয়ে থাকে।

স্টেট কি ল্যাবরেটরি অফ স্পেস ওয়েদার এর পদার্থবিদ ডাঃ জিয়াওজিয়াও ঝাং-এর নেতৃত্বে একটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, “সূর্য স্থিতিশীল একটি নক্ষত্র নয়, এটি মাঝেমধ্যেই মহাকাশে শক্তিশালী বিকিরণ এবং প্লাজমা উৎক্ষেপণ করে থাকে। এরকমই কোনো করোনাল ভর ইজেকশন (যাকে সৌর ঝড়ও বলা হয়) পৃথিবীতে আচমকাই আঘাত হানলে মানবসভ্যতা ভয়ঙ্কর পরিণতির সম্মুখীন হবে। এই ধরনের সৌরঝড়ের ভূ-চুম্বকীয় হাই ভোল্টেজ কারেন্ট সমগ্র বিদ্যুৎ পরিবহন ব্যবস্থাকেই নষ্ট করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।”

চীনের গবেষক দলটি সৌর ঝড়ের সম্ভাব্য প্রভাব পরিমাপ করতে গুয়াংডং ৫০০ কেভি পাওয়ার গ্রিডের উপর একটি পরীক্ষা করেছিল। সেখানে সৌর ঝড়, ভূ-সংযোগ এবং পাওয়ার গ্রিড – তিনটি শক্তির সংমিশ্রনের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া পরিমাপ করা হয়েছিল। মডেল হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল ১৯৮৯ সালে ঘটে যাওয়া ক্যারিনটন সৌরঝড়ের সমান ক্ষমতাসম্পন্ন শক্তিকে। দেখা গেছিল যে ২০১২ সালের সৌর ঝড়টি যদি পাওয়ার গ্রিডে আঘাত করত, তবে সিস্টেমের মধ্য দিয়ে চলমান পাওয়ার স্পাইক প্রকৃত ঝড়ের সমান বা তার চেয়ে বেশি শক্তিশালী হত।

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, ১৯৮৯ সালের মার্চ মাসে ক্যারিনটন এ ঘটে যাওয়া সৌরঝড়টি এখনো পর্যন্ত আমাদের সভ্যতার ইতিহাসে রেকর্ড করা সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়। হাইড্রো-ক্যুবেক ৭৩৫ কেভি পাওয়ার গ্রিড সৌরঝড়ের আঘাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ৯ ঘন্টা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিল প্রায় ৭০ মিলিয়ন মানুষ।এটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে টেলিগ্রাফ সিস্টেমে আগুন লেগে যায় এমনকি অপারেটররা ইলেকট্রিক শক অনুভব করেন। বিদ্যুৎ না থাকা অবস্থাতেও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামগুলি সচল ছিল সৌর ঝড় থেকে আগত বৈদ্যুতিক প্রবাহের কারণে। আশঙ্কার বিষয় শুধুমাত্র চীন নয়, বিশ্বব্যাপী যে কোনো পাওয়ার গ্রিডই বিধ্বংসী সৌর ঝড়ের কবলে পড়তে পারে।