Smartphone: ভূমিকম্প ও বন্যার আগাম সতর্কতা এবার স্মার্টফোনে, বড় সিদ্ধান্ত ভারত সরকারের

ভারত সরকার প্রতিটি স্মার্টফোন সংস্থাগুলিকে এমনভাবে ডিভাইস তৈরী করার নির্দেশ দিয়েছে, যাতে জরুরী অবস্থায় সতর্কতামূলক বার্তা প্রেরণ ও সম্প্রচারের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত ফিচার ফোনগুলির মধ্যে বর্তমান থাকে

স্মার্টফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। একটি মুহূর্তও আমরা এই ছোট্ট যন্ত্রটি ছাড়া কাটানো তো দূরঅস্ত, কল্পনাই করতে পারি না। সেই স্মার্টফোনের (Smartphone) কার্যকারিতা আরো কিছুটা বাড়াতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ গ্রহণ করল ভারত সরকার মন্ত্রক। সরকার জনসাধারণের নিরাপত্তার বিষয়ে সবসময় তৎপর, আর সেই তৎপরতার নজির হিসাবেই এবার ইন্ডিয়ান মিনিস্ট্রি অফ কমিউনিকেশনের তরফ থেকে প্রকাশ করা হল, ইন্ডিয়ান ওয়্যারলেস টেলিগ্রাফি (সেল ব্রডকাস্টিং সার্ভিস ফর ডিজাস্টার অ্যালার্ট) রুলস।

এই রুলস অনুযায়ী, ভারত সরকার প্রতিটি স্মার্টফোন সংস্থাগুলিকে এমনভাবে ডিভাইস তৈরী করার নির্দেশ দিয়েছে, যাতে জরুরী অবস্থায় সতর্কতামূলক বার্তা প্রেরণ ও সম্প্রচারের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত ফিচার ফোনগুলির মধ্যে বর্তমান থাকে। এই নির্দেশ অনুসারে, ইন্ডিয়ান মিনিস্ট্রি অফ কমিউনিকেশনের তরফ থেকে বিশেষ কিছু ফিচার স্মার্টফোনগুলিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই ফিচারগুলি সম্পর্কে।

  • যেকোনো দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে ফোনগুলিতে বাংলা, ইংরেজি এবং হিন্দি, এই তিনরকম ভাষাতেই যেন বার্তা পাঠানো সম্ভব হয়।
  • চব্বিশ ঘণ্টার জন্য যে কোনো পরিস্থিতিতে জরুরী বার্তা গ্রহণের উপযোগী মেমরি এবং স্টোরেজ সিস্টেম যেন ফোনগুলিতে উপলব্ধ থাকে সেই বিষয়ে নজর দিতে হবে।
  • জরুরী পরিস্থিতিতে পাঠানো বার্তাটি যতক্ষণ না পর্যন্ত পাঠক পড়ছেন এবং সেই বিষয়ে অবগত হচ্ছেন ততক্ষণ পর্যন্ত বার্তাটি যেন ফোনস্ক্রিনে দেখা যায় সেই দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
  • ডিভাইসগুলিকে এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে ন্যূনতম ত্রিশ সেকেন্ড পর্যন্ত মোবাইলে অ্যালার্ট টোন শোনা যায়। পাশাপশি ভাইব্রেশন ও লাইটের সময়সীমাও যেন ত্রিশ সেকেন্ডের কম না হয়।
  • আর জনসাধারণের সচেতনতা বাড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট স্মার্টফোনের ফিচার লিস্টে এবং ব্যবহারকারীর ম্যানুয়ালগুলিতে অবশ্যই সতর্ক বার্তা প্রেরণের বিষয়ে উল্লেখ করতে হবে। সর্বপরি এই নিয়ম কার্যকর হওয়ার ন’মাসের মাথায় সমস্ত স্মার্টফোন সংস্থাগুলিকে এই বিষয়ে নিশ্চিত করতে হবে যে, যে কোনো দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির চরম অবস্থায় স্মার্টফোনের মাধ্যমে সতর্ক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনোরকম প্রযুক্তিগত সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে না সরকারকে। পাশাপাশি নিয়ম কার্যকরী হওয়ার ন’মাসের মাথায় ফোনগুলিতে এমন কিছু ফিচারের অন্তুর্ভুক্ত করতে হবে, যার মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষদের কাছে দুর্যোগপূর্ন পরিস্থিতিতে তাদের ভাষায় যেন সতর্ক বার্তা পৌঁছে যায়।

ভারতীয় সংবিধানের অন্তর্গত অষ্টমতম তফসিল অনুসারে নিয়ম কার্যকর করা হবে বলে সরকারের তরফ থেকে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়! আমাদের দেশে এখনো এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে স্মার্টফোনের নেটওয়ার্ক উপলব্ধ নয়। ভারত সরকার মন্ত্রকের তরফ থেকে সমস্ত স্মার্টফোন নির্মাতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে , সতর্ক বার্তা প্রেরণযোগ্য করে তোলার পাশাপাশি সমস্ত ফোনগুলির মাধ্যমে যেন সেইসমস্ত প্রান্তিক অঞ্চলেও সতর্ক বার্তা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে যেন নেটওর্য়াক প্রতিকূলতার মুখোমুখি পড়তে না হয়, সেই দিকেও কড়া নজর রাখার জন্য স্মার্টফোন সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক (MeitY) ভারতীয় সেলুলার অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স অ্যাসোসিয়েশন (ICEA) এবং তথ্য প্রযুক্তির নির্মাতা সংস্থাকে (MeitY) সমস্ত স্মার্টফোনগুলিতে এফএম রেডিও সক্রিয়করণের প্রস্তাব দিয়েছে। এবার স্মার্টফোনের মাধ্যমে সতর্ক বার্তা প্রদানের পদক্ষেপ নেওয়া হলো সরকারের তরফ থেকে।এই পদক্ষেপ দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগের থেকে কিছুটা হলেও বেশি সহায়ক উঠবে এবং জনসাধারণকে বিপদমুক্ত রাখতে সক্ষম হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।