Pegusus: মিসড কল থেকে মেসেজ, আপনার ফোন কীভাবে হ্যাক হতে পারে জেনে নিন

আতঙ্কের নাম পেগাসাস (Pegusus)! ইজরায়েলি হানাদারের আলোচনায় ফের সরগরম গোটা দেশ! তবে ক্ষতিকারক এই স্পাইওয়্যার মূলত মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই হানা দিয়ে থাকে। এভাবেই সে আক্রমণ শানায় এবং খুব সহজেই আক্রান্তের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে তা অন্যত্র সরবরাহ করে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের উপরে নজরদারি চালাবার জন্য ভারতে এই স্পাইওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গোপনে নজরদারি চালাবার ক্ষেত্রে এই স্পাইওয়্যার অত্যন্ত কার্যকর কারণ আক্রান্তের সম্পূর্ণ অজ্ঞাতে এটি তার ডিভাইসে জায়গা করে নিতে পারে।

পেগাসাস (Pegusus) যেভাবে কাজ করে

পেগাসাস একটি জিরো-ক্লিক প্রযুক্তি ব্যবহারকারী স্পাইওয়্যার যা আমাদের ডিভাইসে প্রবেশের সময় কোনরকম অনুমতির তোয়াক্কা করেনা। অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস প্ল্যাটফর্মের ডিভাইস এর দ্বারা সহজেই আক্রান্ত হতে পারে। স্মার্টফোনে জায়গা করে নিলেও সেখানে পেগাসাসের উপস্থিতি বোঝার কোন উপায় নেই। সম্পূর্ণ অজান্তেই এটি আমাদের সমস্ত তথ্য হাসিল করতে থাকে। ফোন কল, মেসেজ, ভুয়ো লিঙ্ক প্রেরণের মাধ্যমে পেগাসাস আমাদের ডিভাইসে প্রবেশ করে। সবথেকে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো উক্ত ফোন কল গ্রহণ বা লিঙ্কে ক্লিক না করলেও স্পাইওয়্যারের ডিভাইসে প্রবেশ করতে কোন অসুবিধে হয়না। অর্থাৎ হ্যাকিংয়ের জন্য এটি আক্রান্তের ন্যূনতম অংশগ্রহণটুকুও দাবী করেনা!

অন্য যে সমস্ত উপায়ে একজন ফোন হ্যাকিংয়ের শিকার হতে পারেন

ভুয়ো অ্যাপ – ভুয়ো অ্যাপের মাধ্যমে ডিভাইস হ্যাকিং সাইবার অপরাধীদের একটি পরিচিত উপায়। বিভিন্ন থার্ড পার্টি অ্যাপ স্টোর ও সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইটগুলিতে এমন ভুয়ো অ্যাপ্লিকেশনের দেখা পাওয়া যায়। এগুলি ডাউনলোড করলেই আমাদের ডিভাইসে ক্ষতিকারক স্পাইওয়্যার বা ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে যা মুহূর্তের মধ্যে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের হদিশ অন্যের কাছে পৌঁছে দেয়।

বিপজ্জনক লিঙ্ক – সাধারণ মেসেজিং বা হোয়াটসঅ্যাপের (Whatsapp) মাধ্যমে বিপজ্জনক লিঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া অসাধু সংস্থার পরিচালকদের অন্যতম প্রধান চাল। উক্ত লিঙ্কে ক্লিক করার সাথে সাথে ক্ষতিকারক ম্যালওয়্যার ও ভাইরাস আমাদের ডিভাইসসে প্রবেশ করে। ব্যাঙ্কের গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ বা কোনো বড় পুরষ্কার জেতার হাতছানি নিয়ে সামনে আসা এই ধরনের লিঙ্কে ক্লিক করার আগে তাই বারবার ভেবে দেখা উচিত।

WiFi সংযোগ ব্যবহার করে হ্যাকিং

গণব্যবহারযোগ্য ওয়াইফাই‌ (WiFi) পরিষেবার আস্বাদ নিতে গিয়ে বর্তমানে বহু মানুষ হ্যাকিংয়ের শিকার হচ্ছেন। তাই গণপরিসরে মুক্ত ওয়াইফাই (WiFi) পরিষেবা ব্যবহার করে কোন ধরনের অর্থনৈতিক লেনদেন না করাটাই আসলে বুদ্ধিমানের কাজ।

ব্লুটুথ হ্যাকিং বা ব্লু-বাগিং – ওয়াইফাইয়ের মতো ব্লুটুথ সংযোগ ব্যবহার করে হ্যাকিংয়ের ঘটনাও বর্তমানে ক্রমবর্ধমান। বাড়ির বাইরে জনপূর্ণ স্থানে ডিভাইসের ব্লুটুথ সংযোগ সক্রিয় থাকলে হ্যাকারেরা তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। এভাবে ভরসাযোগ্য নেটওয়ার্কের বদলে ডিভাইসের সঙ্গে সংযোগ তৈরী করে তারা আমাদের ব্যাঙ্কিং সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে।

সিম কার্ড বদল – সিম কার্ড বদলে হ্যাকিং বর্তমানে একটি জনপ্রিয় পন্থা। এভাবে হ্যাকারেরা ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়ে আমাদের নামে নতুন সিম কার্ডের জন্য আবেদন করে। টেলিকম অপারেটর সেই আবেদন মঞ্জুর করলেই তারা নতুন সিম কার্ড হাতে পেয়ে যায় এবং আমাদের প্রতারিত করে।

ইউএসবি(USB) কেবল ব্যবহার করে হ্যাকিং – ইউএসবি কেবলের মাধ্যমে মোবাইল চার্জ ছাড়াও আমরা ডেটা আদান-প্রদান করে থাকি। ইউএসবি পোর্ট যুক্ত অবস্থায় হ্যাকারেরা আমাদের ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল এবং তথ্য সরিয়ে ফেলতে পারে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন