Facebook এর ‘হাহা’ ইমোজি নিয়ে ফতোয়া জারি বাংলাদেশের ধর্মগুরুর, কারণ জানুন

ফেসবুকে নিজের তিন মিলিয়নেরও বেশী ফলোয়ারের উদ্দেশ্যে ‘বিশেষ বার্তা’ দিলেন বাংলাদেশের এক স্বঘোষিত ধর্মগুরু! তার কথা মেনে নিলে অবশ্য এবার থেকে আচরণে হতে হবে সংযত – অন্ততপক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায়! সেক্ষেত্রে সামাজিক মাধ্যমে অবাধ ট্রোলিংয়ের এই স্বর্ণযুগে ফেসবুকের আপামর জনতা বঞ্চিত হবেন তাদের প্রিয় ‘হাহা'(Haha) ইমোজির ব্যবহার থেকে। আজ্ঞে না, একটুও বাড়িয়ে বলছিনা, ফেসবুকে হাহা ইমোজি ব্যবহার করে কাউকে বিদ্রুপ বা পরিহাস করা সম্পূর্ণ ইসলামবিরোধী, আর সেকারণেই অনুগামীদের হাহা ইমোজি ব্যবহার থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের ঐ ধর্মগুরু, যা নিয়ে নেটাগরিকদের দুনিয়ায় রীতিমতো সাড়া পড়ে গিয়েছে।

সত্যি কথা বলতে গেলে একুশ শতকের অধিবাসী হলেও কারো কারো মন সময়ের বহু পিছনে পড়ে থাকে। তারা নিজেদের মধ্যযুগীয় চিন্তাভাবনার দ্বারাই প্রতিটি ঘটনাকে বিচার-বিবেচনায় অগ্রসর হন। ফলে তৈরী হয় নতুন নতুন ফতোয়া যার সাথে সুস্থ বোধবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের পদে পদে বিরোধ বাধে। যদিও এই কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষেরা তাতে বিশেষ বিচলিত হন না। তারা নির্দ্বিধায় এবং অনর্গল ভাষায় সর্বত্র নিজের মতামত প্রচার করতে থাকেন। আমাদের অনেকের কাছে এগুলি হাস্যকর মনে হলেও, বহু মানুষ সত্যিই এর দ্বারা প্রভাবিত হন, এইসব ফতোয়া বা নির্দেশ মেনে চলেন। তাই একেবারে উপেক্ষা করার মতো মনে হলেও বাংলাদেশের ইসলামিক ধর্মগুরুর হুকুমটিকে পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায়না।

এবার ঘটনায় ফিরে আসা যাক। এতক্ষণ যার সম্পর্কে কথা বলছি অর্থাৎ সেই বহু অনুগামী বিশিষ্ট ধর্মগুরুর নাম আহমাদুল্লাহ। সম্প্রতি তিনি ফেসবুক (Facebook) ও ইউটিউবের (YouTube) মতো মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানে তার সাফ বক্তব্য এই যে ইসলাম ধর্মে আস্থাশীল সমস্ত মানুষের জন্য ফেসবুকের হাহা ইমোজি ব্যবহার প্রকৃতপক্ষে হারাম! অতএব প্রতিটি মুসলিমকে সামাজিক মাধ্যমে হাহা ইমোজির ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে!

আহমাদুল্লাহ মহাশয়ের দাবী অনুযায়ী বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা অন্যকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করতে গিয়ে হাহা ইমোজির শরণাপন্ন হই। অথচ মুসলিমদের ক্ষেত্রে এভাবে অপরকে নিয়ে ঠাট্টা বা হাসাহাসি অনুচিত, কেননা তা ইসলাম-বিরোধী। তাই বিশুদ্ধ মজার সময় ‘হাহা’ ব্যবহারে বাধা না থাকলেও, অন্যের বিরুদ্ধে এই ইমোজির ব্যবহার সম্পূর্ণ অসঙ্গত। তাই তিনি সকলকে এই ধর্মবিরোধী কাজ এড়িয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

খুব স্বাভাবিকভাবেই ধর্মগুরুর এই ফতোয়া প্রকাশ্যে আসার পর নেটিজেনদের মধ্যে তুমুল বিতর্ক ও আলোচনার সূত্রপাত হয়। যুক্তিবোধ সম্পন্ন বাংলাদেশের বহু মানুষ ধর্মগুরুর উপরোক্ত মন্তব্যের বিরোধিতা করেন এবং সেটা করতে গিয়েই তারা আহমাদুল্লাহ ও তার অনুগামীদের জন্য বাছা বাছা বিদ্রুপ-বিশেষণ ছুঁড়ে দেন! অচিরেই এই ঘটনার তরঙ্গ এদেশের নেটিজেন মহলকে স্পর্শ করে। এক্ষেত্রে দেখা যায় বাংলাদেশ হোক বা পশ্চিমবঙ্গ, মন দিয়ে ধর্মগুরুর বক্তব্য শোনার পর বেশীরভাগ মানুষই তার পোস্টটিকে অজস্র ‘হাহা’য় ভরিয়ে দিয়েছেন!

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন