গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত দম্পতির জীবন বাঁচাল স্মার্টফোন, বিপদে কীভাবে রক্ষা করে এই প্রযুক্তি

টেক জায়ান্ট অ্যাপল (Apple) তাদের নিত্যনতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তির দৌলতে এখন প্রায়শই খবরের শিরোনামে জায়গা করে নিচ্ছে। এইসকল প্রযুক্তি যেমন মানুষের জীবনকে সহজ করে তুলেছে, তেমনি রক্ষাকারী হিসাবেও কিন্তু কাজ করে। যেমন এযাবৎ বহুবার অ্যাপল ওয়াচ দ্বারা একাধিক ব্যক্তির জীবন রক্ষার কাহিনী আমাদের গোচরে এসেছে। তবে এবারের স্পটলাইটে ওয়্যারেবল নয় বরং আছে গত সেপ্টেম্বরে লঞ্চ হওয়া লেটেস্ট আইফোন ১৪ (iPhone 14) সিরিজের স্ট্যান্ডার্ড মডেলটি। আসলে চলতি বছরে আগত এই লাইনআপে টিম কুকের সংস্থাটি প্রথমবারের জন্য স্যাটেলাইট ইমার্জেন্সি এসওএস (SOS) পরিষেবার সুবিধা উপলব্ধ করেছে। আর এই ফিচারের দৌলতেই ৩০০ ফুট গহীন পাহাড়ি খাদে পরেও প্রাণ নিয়ে বেঁচে ফিরতে পেরেছেন এক দম্পতি। বাস্তব জীবনে ঘটে যাওয়া এই রোমহর্ষক কাহিনীটি চলুন বিস্তারে আপনাদের বলি…

Apple iPhone 14 ফোনের SOS ফিচার দম্পতির জীবন বাঁচালো

মন্ট্রোজ রিসার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিম দ্বারা পোস্ট করা একটি টুইটের মাধ্যমে এই খবরটি প্রকাশ্যে আসে এবং মুহূর্তেই উদ্ধার অভিযানের ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায় নেটপাড়ায়। জানা যাচ্ছে, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাঞ্জেলেস ফরেস্ট হাইওয়েতে। এক দম্পতি গাড়িতে করে তাদের গন্তব্যস্থলে যাচ্ছিলেন। কিন্তু উক্ত হাইওয়েতে গাড়ি ব্যালেন্স হারিয়ে বা স্কিট করে আকস্মিক ৩০০ ফুট গভীর পাহাড়ি খাদে পরে যায়। তবে ভাগ্যক্রমে দুর্ঘটনার কবলে পরা এই গাড়িটি একদম নিচে পরে ধূলিসাৎ হওয়ার পরিবর্তে পাহাড়ের খাঁজেই আটকে যায়। যদিও গাড়ির ভেতরে থাকা স্বামী-স্ত্রীকে এরূপ পরিস্থিতিতে জীবন-মরণের লড়াইয়ে লিপ্ত হতে হয়েছিল। কেননা তাদের ফোনে কোনো নেটওয়ার্ক না থাকায়, তারা কাউকে সাহায্যের জন্য ডাকতে পারছিলেন না। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের কাছে থাকা আইফোন ১৪ মডেলের স্যাটেলাইট এসওএস ফিচারটি বিশেষ সহায়তায় এসেছিল।

আসলে এসওএস ফিচারে থাকা ক্র্যাশ ডিটেকশন মোড ইউজারের গাড়ির দুর্ঘটনা ঘটেছে কি না তা শনাক্ত করতে সক্ষম। একই সাথে সেলুলার ও ওয়াই-ফাই কভারেজের বাইরে থাকলেও স্যাটেলাইটের সাহায্যে মেসেজ পাঠানো যায় আইফোন ১৪ -এ। যার দরুণ আইফোনটি তার মালিকের গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটেছে বোঝার সঙ্গে সঙ্গেই স্যাটেলাইট এসওএস ফিচারের মাধ্যমে এমার্জেন্সি বা জরুরি নম্বরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে এবং সাহায্যের জন্য কল করে।

আরো জানা যাচ্ছে যে, দুর্ঘটনার সময় আইফোনের স্যাটেলাইট সার্ভিস এমার্জেন্সি এসওএস রেসকিউ টিমের সাথে যোগাযোগ করতে সাহায্য করেছিল। এমনকি অ্যাপল রিলে সেন্টারে মেসেজ পাঠানোর থেকে শুরু করে, এলএ (LA) কাউন্টি শেরিফ ডিপার্টমেন্টকে উদ্ধারকার্যের জন্য ডাকা সমস্ত কাজই করছে অ্যাপ বিকশিত এই নতুন স্যাটেলাইট জরুরি পরিষেবাটি।

প্রসঙ্গত, মোবাইল টাওয়ার না থাকলেও স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সরাসরি নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি পায় স্মার্টফোন। এই প্রযুক্তিতে, স্মার্টফোন লো-আর্থ অরবিট (LEO) উপগ্রহের সাথে কমিউনিকেশন করে এবং ফাইন্ড মাই অ্যাপ ব্যবহার করে জরুরী পরিষেবা সরবরাহকারীদের সাথে তার লোকেশন শেয়ার করতে পারে। অর্থাৎ, ফোনে নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি ছাড়াই ব্যবহারকারীরা কল বা মেসেজ করতে পারবেন। যদিও অ্যাপল বর্তমানে তাদের স্যাটেলাইট এমার্জেন্সি এসওএস পরিষেবাকে – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের ইউজারদের আইফোন ১৪ সিরিজের ফোনেই উপলব্ধ করেছে।